ছাত্রলীগ নেতা ইমন হত্যার প্রধান হোতা গ্রেফতার, ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

fec-image

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা ইমন হাসান মওলা (২৪) হত্যার মূল হোতা আব্দুল্লাহ খান প্রকাশ আব্দু খান (২৭) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সেই সঙ্গে ইমনের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (২৪ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফের কচুবনিয়া এলাকা থেকে আব্দু খানকে গ্রেফতার করা হয়। সে কক্সবাজার পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের পেশকারপাড়ার খাইরুল আহমদের ছেলে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি আব্দুল্লাহ খান স্বীকার করেছে বলে জানান র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ, সুপার সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. বিল্লাল উদ্দিন। তিনি জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।

এদিকে, ইমন হত্যার ঘটনায় রবিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পিতা মোহাম্মদ হাসান। যার মামলা নং-৫৫/৪৮১।

এজারনামীয় আসামিরা হলেন, আব্দুল্লাহ খান প্রকাশ আব্দু খান, রমজান আলী, আব্দুল্লাহ আহাদ ছোটন, ছৈয়দ আকবর, মুন্না (কালা মুন্না), মোহাম্মদ সানি, মোহাম্মদ জুয়েল প্রকাশ ফরহাদ ও মোহাম্মদ তৌহিদ। অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরো ৭/৮ জন।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।

তিনি জানান, নিহত ইমন হাসান মওলার পিতা মোহাম্মদ হাসান বাদি হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগে মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধান আসামি আব্দুল্লাহ খান প্রকাশ আব্দু খানকে এবং সন্দেহভাজন ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইমন হত্যা মামলার সকল আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান মো. সেলিম উদ্দিন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কক্সবাজার শহরের পেশকার পাড়া সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর সিকো বরফ কল পয়েন্টে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন ইমন হাসান মওলা।

মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে আশঙ্কাজনকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে মারা যান ইমন।

সে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর টেকপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাছানের ছেলে।

এদিকে, রবিবার বিকালে র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন সহকারী পুলিশ (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ বিল্লাল উদ্দিন।

আসামি আব্দুল্লাহ খানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরে ইমন হাসান মাওলার পিতার একটি দোকান রয়েছে। গত কয়েক মাস আগে সেই দোকানে ইমনের পিতার সাথে আব্দুল্লাহ খান ও তার সহযোগীদের বাগবিতন্ডা হয়েছিল। এর জের ধরে ইমন ও আব্দুল্লাহ খানের সহযোগিদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আব্দুল্লাহ খান এর পরিবার ইমন ও তার সহযোগিদের নামে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর মামলা করে। যার কক্সবাজার সদর থানার এফআইআর নং-৪১/৬৭৯।

ওই মারামারির ঘটনার প্রতিশোধ নিতে আব্দুল্লাহ খান সুযোগ খুঁজতে থাকে এবং পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২১ জুলাই রাতে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে।

হত্যাকাণ্ডের আব্দুল্লাহ খান এবং তার সহযোগীরা ১টি চাপাতি ও ১ টি ছুরি ব্যবহার করে। ব্যবহৃত ছুরি এবং চাপাতিটি ইমনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২/৩ মাস পূর্বে আব্দুল্লাহ খান ও তার আরেক সহযোগির হেফাজতে সংগ্রহ করে রেখেছিল।

 

 

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, ছাত্রলীগ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন