পানছড়িতে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে হালিমের সফলতা
পানছড়িতে কেঁচো থেকে পরিবেশ রক্ষাকারী জৈব সার তৈরিতে সফলতা পেয়েছে নার্সারার হালিম।এপিজিক বা এন্ডিজিক নামক এক প্রজাতির কেঁচোর মাধ্যমে এ সার উৎপাদন করা হয়।
বিশেষভাবে তৈরি ট্যাংকি ও রিংয়ে লতাপাতা, কচুরিপানা ও জমিয়ে রাখা গোবরে ছেড়ে দেয়া কেঁচোর ত্যাগ করা মল আর শরীর থেকে এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত হয়ে উন্নত জৈব সারে পরিনত হয়। যা ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার নামেই পরিচিত। এটা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর ও পরিবেশ বান্ধব।
জানা যায়, নার্সারার আবদুল হালিম উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মো. এরশাদ আলী বড় সন্তান। গত মাস ছয়েক আগে বান্দরবান থেকে নার্সারীর উপর প্রশিক্ষণে গিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির ধারণা নিয়ে এসেই কার্যক্রম শুরু করে। চারটি ট্যাংকি ও দশটি রিংয়ে দশ কেজি কেঁচো দিয়েই তার পদযাত্রা।
বাবা-মা, ডিগ্রি পড়ুয়া ছোট ভাই মিলে ঘামঝরা পরিশ্রমে পুঁজি দেয় ষাট হাজার টাকা। এরই মাঝে সফলতা আসা শুরু হয়েছে বলেও পার্বত্যনিউজকে জানান হালিম। প্রতি মাসে একবার সার বের হয়। এরই মাঝে প্রায় এক টনের অধিক বাজারজাত করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় বিশ হাজার টাকা। আরও পাঁচশত কেজির মতো প্রক্রিয়াধীন। তবে কেঁচোও বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। প্রায় তিন কেজি কেঁচো দুই হাজার টাকা দরে মাটিরাঙায় বিক্রি করা হয়েছে।
পানছড়ি উপজেলা কৃষি অফিস বিশেষ করে সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমার আন্তরিকতার কথা বার বার তুলে ধরে সে। বিভিন্ন পরামর্শ থেকে শুরু করে সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে এ কাজ এগিয়ে নিতে তার ভূমিকার কথা জানায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা জানায়, হালিম নার্সারী ও ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে খুবই পারদর্শী। খুব দ্রুত সে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরিতে সফলতা অর্জন করেছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
উপজেলা কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভার্মি কম্পোস্টের ব্যাপারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি সকল প্রকার ফসলে ব্যবহারযোগ্য এবং কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
বর্তমানে এটির বাজারমূল্য প্রতি কেজি পনের থেকে বিশ টাকা বলে জানালেন তিনি। আবদুল হালিমের দাবি তার পূঁজি কম। কৃষি ক্ষেত্রে বড় ধরণের ঋণের ব্যবস্থা থাকলে আরও বড় আকারে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছে সে। তাছাড়া ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির উপর কেউ প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে বিনামূল্যে শিখিয়ে সার্বিক সহযোগিতা দিবে বলে জানায়।