লামা বন বিভাগে একবছরে আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আয়

 

আলীকদম প্রতিনিধি:

গত একবছরে জব্দকৃত কাঠ নিলামে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে ২ কোটি ৫১ লাখ ৯২ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে লামা বন বিভাগ। এ সময় লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন রেঞ্জ থেকে অবৈধভাবে পাচারের সময় ২৫ হাজার ৭৮ ঘনফুট সেগুন ও গামারীসহ বিভিন্ন প্রজাতির এসব কাঠ জব্দ করা হয়। কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয় ৩৭৪টি। গ্রেফতার করা হয় ৫ কাঠ পাচারকারীকে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে লামা বন বিভাগের আওতাধীন আলীকদম উপজেলার তৈন রেঞ্জ থেকে ৮০০.৬৫ ঘনফুট ও মাতামুহুরী রেঞ্জ থেকে ২ হাজার ৭৭৬ ঘনফুট কাঠ অবৈধভাবে পাচারের সময় জব্দ করা হয়। এ সময় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয় ৫জন পাচারকারীকে। এছাড়া পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা করা হয় তৈন রেঞ্জে ৫২টি ও মাতামুহুরী রেঞ্জে ৪২টি। ইতোমধ্যে জব্দকৃত কাঠ নিলামে দিয়ে রাজস্ব আয় হয় তৈন রেঞ্জে ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং মাতামুহুরী রেঞ্জে ৯৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

অপরদিকে, লামা সদর রেঞ্জে জব্দ করা হয় ২ হাজার ১৪২ ঘনফুট কাঠ। পাচাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় ৩৫টি। এ রেঞ্জের জব্দকৃত কাঠ নিলাম দিয়ে রাজস্ব আয় হয় ৫০ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এছাড়া নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন রেঞ্জ থেকে জব্দ করা হয় ১৯ হাজার ৩৬০ ঘনফুট কাঠ। একই সময় চোরাই কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ২৪৫টি মামলা রুজু করা হয়। আবার এসব জব্দকৃত কাঠ নিলামের মাধ্যমে ৮৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা কোষাগারে রাজস্ব জমা করা হয়।

স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আহমদ হোসেন সওদাগর বলেন, তারা জোত পারমিটের মাধ্যমে বৈধভাবে ব্যবসা করছেন। বন বিভাগের ধারাবাহিক অভিযানের কারণে বর্তমানে অবৈধ কাঠ পাচার সম্পূর্ণ বন্ধ। অবৈধ কাঠ পাচাররোধে তারা বন বিভাগকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

মাতামুহুরী রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমানে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ পাচার বন্ধে আমরা সক্রিয়া আছি। পাশাপাশি নিরাপত্তাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি সদস্যরা কাঠ পাচার বিরোধী অভিযানে বন বিভাগকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা বন বিভাগকে কাঠ পাচাররোধে সহযোগিতা করে আসছে।

এ বিষয়ে বন বিভাগের তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার সামসুল হুদা জানান, শতভাগ সরকারি নির্দেশনা মেনে জোত পারমিট ইস্যু করা হয়। এতে সরকারি বনের কাঠ পাচার দূরে থাক, চিন্তাও করা যায়না। সংরক্ষিত বন রক্ষায় বন বিভাগ কর্মকর্তারা অনেক বেশি সচেতন।

লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাঠ পর্যায়ে বনজদ্রব্য পাচাররোধে বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সদাতৎপর। বনজদ্রব্য পাচার এখন বন্ধ। সম্প্রতি একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছড়িয়ে লামা বন বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্ণের চেষ্টা করছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন