অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিএনপি’র ৫০০ নেতাকর্মীর আওয়ামী লীগে যোগদান

Bandarban pic-1  6.9.2014
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বান্দরবানে সদর উপজেলায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা কর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে।

শনিবার রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর এমপির হাতে ফুল দিয়ে সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাচ প্রু (সাবু) আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের আদর্শে আদর্শিত হয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে ভালবেসে বিএনপির পাঁচশতাধিক নেতা-কর্মী ও নারী-পুরুষ আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন যোগদানকারীরা।

সদ্য যোগদানকারী সাচ প্রু জানান, বান্দরবানে বিএনপির রাজনীতিতে রাজ পরিবারের দু’সদস্য জেরী-ম্যমাচিং এর দন্দ্বের কারণে নেতা-কর্মীরা বারবার দলের সমর্থকদের কাছে নির্যাতিত হয়ে আসছে। উপজেলা নির্বাচনের পর ম্যমাচিং নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় বিএনপির সভাপতি সাচিং প্রু জেরী দলের নেতা-কর্মীদের সাথে খারপ আচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতা হয়ে উঠেছেন।

তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করেছি। যেখানে দলের নেতারা কর্মীদের খোঁজখবর রাখেনা এবং তাদের সুখ দুঃখর খোঁজ খবর রাখেনা তাদের সাথে রাজনীতি করে লাভ কি? কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর এমপির হাতকে আরো শক্তিশালী করতে আমরা আওয়ামীলীগে যোগদান করেছি।

এ সময় আরো যোগ দিয়েছেন সদর উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুনীতি জীবণ মিন্টু, সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও ইউপি সদস্য মংনুচিং, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য অনুচি ও শৈ ক্রাচিং।
এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জেলায় বিএনপির সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত লামা উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মুছার নেতৃত্বে কয়েকশ’ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদানে বিএনপি অনেকটা বেকায়দায় পড়েছে। গতকাল (শুক্রবার) লামা গেস্ট হাউস মিলনায়তনে লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইসমাইলের সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির হাতে ফুল দিয়ে ছয় শতাধিক নেতা কর্মী আওয়ামীলীগে যোগদান করে। যোগদানকৃত মধ্যে ৭ জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রয়েছে। আজিজনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা মো জাবেরের নেতৃত্বে এই যোগদান সম্পন্ন হয়।

এর আগে এছাড়া আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতিরও শতাধিক নেতা কর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লামায় বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা কমে আসায় ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা জেলা নেতৃবৃন্দের উপর আস্থা হারিয়ে অন্য সংগঠনে যোগদান করছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বান্দরবানে অন্যকোন দলের নেতাকর্মীর এটিই সবচেয়ে বড় যোগদান অনুষ্ঠান। লামা থেকে হঠাৎ বিএনপির নেতা কর্মীরা অন্য সংগঠনে চলে যাওয়ায় উপজেলার নেতা কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে কথা হলে লামা বিএনপির সহ-সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মজুমদার জানান, যারা আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে সবাইতো বিএনপির নয়। এরা মূলত মাম্যাচিং গ্রুপের নেতাকর্মী। দলে মূল্যায়ন না হলে কেউ কি থাকবে? নেতা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। জেলা সভাপতির বিষয়টি বোঝা উচিত। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যা সমাধান করার, কিছু নেতার জন্য তা সম্ভব হয়নি-হচ্ছে না।

আওয়ামী লীগে সদ্য যোগদানকারী বিএনপি নেতা আবু মুছা জানান, বান্দরবানে বিএনপির রাজনীতি ঘর কেন্দ্রীক হয়ে পড়েছে। এভাবে চললে বাকী নেতাকর্মীরাও অন্য সংগঠনে যেতে বাধ্য হবে।

এদিকে সাচ প্রু (সাবু) আওয়ামীলীগে যোগদান করার খবরে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, বিএনপির সভাপতি সাচিং প্রু জেরী দলের নেতা-কর্মীদের সাথে সেচ্ছাচারীতা মনোভাব পরিহার না করলে তারা অন্য সংগঠনে যোগদান করবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন