কক্সবাজার পৌরসভা ১০ নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচন: সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রার্থীদের
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার:
বহুল প্রত্যাশিত কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচন (১৬ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার। সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে। শেষ হবে বিকাল চারটায়।
নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন প্রয়াত কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদের ছোট ভাই কফিল উদ্দিন (টেবিল ল্যাম্প), পৌর আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদ কায়সার মো: নোবেল (উটপাখি) এবং সাবেক কাউন্সিলর জসীম উদ্দিন (পাঞ্জাবী)।
তারা নিজ-নিজ যোগ্যতার পরিচয় ভোটারদের কাছে উপস্থাপন করতে পেরেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বি ৩ প্রার্থীই নিজেদের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি। এখন অপেক্ষার পালা ভোটাররা কাকে জয়ের মালা উপহার দেন। সবার দৃষ্টি ভিআইপি ওয়ার্ড হিসেবে পুরো পৌরবাসীর চোখ এখন এই উপ-নির্বাচনের দিকে।
তবে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থী। তারা ভোট গ্রহণ থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি র্যাব-বিজিবি মোতায়েন দাবী করেছেন।
নির্বাচনে ভোট ডাকাতির আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বি টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের প্রার্থী কফিল উদ্দিন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থী জাবেদ কায়সার মো: নোবেল ও তার লোকজন জনগণের রায় ছিনিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে। ভোটারদের হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। এ কারণে নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণের স্বার্থে ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের দাবী তুলেছেন তিনি। একই সাথে ভোট সুষ্ঠু করতে সংবাদকর্মীদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী কফিল উদ্দিন।
একই অভিযোগ কাউন্সিলর প্রার্থী জসিম উদ্দিনের। তিনি বলেন, উট পাখি প্রতীককে জিতিয়ে আনার পাঁয়তারা শুরু করেছেন সরকারী দলের লোকজন। পৌরপ্রিপ্যারেটরী ভোটকেন্দ্র দখলের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ কেন্দ্রে ৩ হাজার পাঁচ ভোটের মধ্যে ১৮০০ ভোটারের অস্তিত্ব রয়েছে। বাকীরা ভোটার তালিকায় থাকলেও কর্মজীবী হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় বদলী হয়ে চলে গেছেন। এসব অনুপস্থিত ভোটগুলোকে কাস্টিং ভোট দেখিয়ে নেওয়া পরিকল্পনা সরকারী দলের নেতাদের। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ আকারে জানানো হয়েছে। এরপরও ভোট নিয়ে কোন ধরণের কারচুপি হলে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে সব ধরণের আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ১০ নং ওয়ার্ড উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনে কারচুপির কোন সুযোগ নেই। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যা যা করণীয় তাই করা হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবেন তিনিই কাউন্সিলর হবেন।
জেলা নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, এ ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র রয়েছে দু’টি। একটি বাহারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং অপরটি কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যারেটরী উচ্চ বিদ্যালয়। দুইকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৬২৯ জন। এদের মধ্যে ৩১৪৩ জন পুরুষ ও ২৪৮৬ জন মহিলা জন। দুই কেন্দ্রে মোট বুথ রয়েছে ১৭টি।
প্রসঙ্গত, ১০ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ গত ১৭ ডিসেম্বর মারা যান। এতে কাউন্সিলর পদটি শূন্য হলে গত ৪ মার্চ এ ওয়ার্ডে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। শুন্য পদে কাল বৃহস্পতিবার উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হচ্ছে।