কাউখালীর কলাবাগান ঝর্ণায় পাহাড়ি যুবকদের হামলা, নারী পুরুষসহ আহত ৩

কাউখালী প্রতিনিধি:

ভ্রমন পিপাসুদের বিনোদনের অন্যতম স্থান কাউখালীর ঘাগড়ার কলাবাগান ঝর্ণা এলাকা পাহাড়ী উশৃঙ্খল যুবকদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাকৃতিক এ ঝর্ণা দেখতে আসা পর্যটকদের উপর মাতালদের হামলার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২১ জুলাই বিকালে ঘাগড়া কলাবাগান এলাকার ঝর্নায় গোসল করতে আসা পর্যটকদের উপর হামলা চালায় নেশাগ্রস্থ পাহাড়ি যুবকরা। এতে আহত হয় নারী পুরুষসহ ৩ জন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বর্ষায় ঝর্ণায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় প্রতিদিন শত শত পর্যটক প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে প্রাকৃতিক ঝর্ণার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝর্ণায় গোসল করতে আসা রোখসানা আক্তার রিনা, তার স্বামী মো. রাসেল ও তাদের সঙ্গী আবুল হাসেমের সাথে কয়েকজন উপজাতীয় যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় পাহাড়ী যুবকরা ওই নারী ও তার স্বামীর সাথে অশালীন আচারণ করলে তারা প্রতিবাদ জানায়। মাতাল যুবকরা একপর্যায়ে তাদের উপর হামলা চালায় এবং ব্যাপক মারধর করে। এসময় রোখসানা আক্তার রিনা, তার স্বামী মো. রাসেল ও আবুল হাসেম গুরুতর আহত হয়।

রাউজান থেকে ঝর্ণায় ঘুরতে আসা পর্যটক মোশারফ জানান, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার ফলে ঘাগড়া কলাবাগান ঝর্ণাটির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সুবাদে রাঙ্গামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ঝর্নার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভীড় জমায়। তিনি জানান, ঝর্ণা এলাকায় প্রচুর পর্যটকের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। তবে স্থাণীয় কিছু উশৃঙ্খল পাহাড়ী যুবক মাতাল অবস্থায় স্থাণীয় পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। এসময় রাঙ্গামাটি থেকে ঘুরতে যাওয়া কিছু যুবক ঘটনাস্থালে উপস্থিত হয়ে ঘটনা মীমাংসা করার চেষ্টা চালালে উপজাতীয় যুবকরা তাদের উপরও চড়াও হয়।

হামলার ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে কলাবাগান এলাকায় খানিকটা উত্তেজনা দেখা দেয়। সম্ভাব্য যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শনিবার থেকে ঝর্ণা এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কাউখালী থানা পুলিশ। কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সাবেক ইউপি সদস্য শান্তিমনি চাকমা ও জেএসএস নেতা সুভাষ চাকমা আগামী রবিবার স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হবে বলে জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, এই ঝর্ণায় প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসে। কিন্তু এলাকার কিছু উশৃঙ্খল যুবক মাতাল অবস্থায় পর্যটকদের উপর বিভিন্ন সময় হামলা করে। এতে করে অনেকেই নাজেহাল হয়ে কিছু বলতে না পেরে ফিরে যায়। যুবকরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের কেউ কিছু বলতে পারে না। ফলে নিরাপত্তাহীনতার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে এ ঝর্ণায় আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

খবর পেয়ে কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ কয়েকজন পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঝর্ণা এলাকায় উপস্থিত হয়। কাউথালী থানার ওসি জানান, ঘটনাস্থল থেকে মাতাল অবস্থায় ৮ জন উপজাতীয় যুবককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তাদের অপরাধ বেশী না হওয়ায় সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। পরবর্তী নিদের্শ না দেয়া পর্যন্ত শনিবার থেকে এই ঝর্ণা বন্ধ থাকবে। কাউকে এই ঝর্ণায় যেতে দেয়া হবে না। কেউ যদি যেতে চায় তাহলে ঘাগড়া জোনের অনুমতি নিয়ে যেতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন