খাগড়াছড়িতে নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে নৌকা

fec-image

নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে নৌকা প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি হ্যাট্রিক করতে যাচ্ছেন বরাবরের মতোই। নির্বাচনী মাঠে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করলেও একমাত্র আওয়ামী লীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ছাড়া অন্যদের কোন প্রচারণা তেমন চোখে পড়ছে না। অপর দিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলা প্রশাসক ও জেলা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মুক্তা ধর প্রতিনিয়ত অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করছেন।

খাগড়াছড়ি সংসদীয় (২৯৮) আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা (সোনালী আঁশ) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. মোস্তফা (আম প্রতীক)।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আ’লীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করছেন। তার পক্ষে নেতার্মীরাও মাঠে নেমেছেন। তিনি নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন ও উন্নয়ন ও দেশের মানুষের শান্তি জন্য ৭ জানুয়ারি ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহবান জানাচ্ছেন। তবে অপর প্রার্থীদের তেমন প্রচারণা চোখে পড়ছে না।

খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনে মূলত আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের ভোট ব্যাংক রয়েছে। ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ ২০০১ সাল থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এছাড়া জেএসএস (এমএন) খাগড়াছড়িতে ৪র্থ শক্তি। তবে এবার বিএনপির পাশাপাশি এই দুটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে নিয়ে জাতীয় পার্টি খাগড়াছড়ি আসনে জামানত হারিয়েছিলেন। এবার খাগড়াছড়ি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নতুন।

এদিকে বিএনপি ভোটাদের কেন্দ্রে না যেতে প্রচারণা চালাচ্ছে। পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন এবারের নির্বাচনে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বিজয়ী হয়ে হ্যাট্রিক করতে যাচ্ছেন।

খাগড়াছড়ি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, খাগড়াছড়ি আসনে একপক্ষীয় প্রচার-প্রচারণা চলছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ছাড়া অন্য প্রার্থীরা মাঠে নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার রাজনৈতিক দক্ষতার কাছে অন্য প্রার্থীরা শিশু। ফলে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা হ্যাট্রিক করতে যাচ্ছে এটা নিশ্চিত। আর অন্য প্রার্থীদের জামানত থাকে কিনা সন্দেহ।

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরুণ ভট্টাচার্য বলেন, কাগজে-কলমে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মতো হেভিয়েট প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো শক্তি ও সামর্থ নেই। তাই কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা যে আবার নির্বাচিত হবে তা প্রায় নিশ্চিত।

খাগড়াছড়ি ২৯৮ সংসদীয় আসনে এবার ভোটার সংখ্যা রেড়েছে। বেড়েছে ভোট কেন্দ্রও। সে সাথে ভোটার ও ভোটার সংশ্লিষ্টদের সুবিধার্থে বেশ কিছু ভোট কেন্দ্রও পরিবর্তন করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৬ জন। তার মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৮৫ জন আর পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ৬১। গত বারের চেয়ে ভোটার বেড়েছে ৭৩ হাজার ৬০৩ জন। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেক ভোটার উপজাতি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪১ হাজার ৭৪৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২৬ হাজার ৫২৪ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ২১৯ জন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রও বেড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খাগড়াছড়িতে ভোট কেন্দ্র ছিল ১৮৭টি। এবার ৯টি বেড়ে হয়েছে ১৯৬টি। এছাড়া কেন্দ্র পরিবর্তন হয়েছে ৮টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৬৪ ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসনের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল। তবে এখনো কয়টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ সে তালিকা হয়নি।

খাগড়াছড়ি জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ কামরুল আলম জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় দুটি ও দীঘিনালা উপজেলায় একটি ভোট কেন্দ্রে হেলিকপ্টারে ভোটের উপকরণ পাঠানো হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, নির্বাচন, নৌকা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন