পার্বত্যমন্ত্রীর উন্নয়নে পাল্টে গেছে আলীকদমের চিত্র

fec-image

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা এক সময়ে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় একটিকে পিছিয়ে পড়া উপজেলা হিসেবে বলা হতো। বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এখানকার পর্যটন শিল্প সম্ভাবনাময় একটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়েছে।

আলীকদম সদর-থানচি সড়ক, আলীকদম সদর থেকে জানালীপাড়া- কুরুকপাতা পৌয়ামুহুরী মিয়ানমার সীমান্ত সড়ক বাস্তবায়ন হওয়ায় অপার অম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্প ও প্রান্তিক পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গত পাঁচ বছর আগেও জানালীপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী, দৌছড়ি যাতায়াতের মাধ্যম ছিল পায়ে হাঁটা ও নৌপথে, তবে পার্বত্যমন্ত্রীর উন্নয়ন কল্পে সড়কপথ নির্মিত হওয়ায় এখন সেখানে যানবাহন নিয়ে খুব সহজে যাওয়া যায়। উপজেলাট পিছিয়ে পড়া দুর্গম এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে পাহাড়ের বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং স্থানীদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য দামে বিক্রি ও গুণগত চিকিৎসা সেবাসহ নানা সুবিধা ভোগ করছে আলীকদমের প্রান্তিক জনপদের অধিবাসীরা। এরমধ্যেই আলীকদম উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ, যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছায়নি সে এলাকায় সৌরবিদ্যুতের আলোতে আলোকিত হয়েছে পাহাড় পল্লী জনপদ।

আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অংশেথোয়াই মার্মা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছে। বিগত কোন সরকারের আমলে এত উন্নয়নের নজির দেখতে পাইনি উপজেলাবাসী। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন পার্বত্যরত্ন বীর বাহাদুরের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে, গ্রাম আর গ্রাম নেই, তা এখন শহরে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ২০১৭ সালের দিকে আলীকদমে ২০টি প্রাইমারি স্কুল সরকারিকরণ করা হয়েছে। এখন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির একান্ত ইচ্ছায় অবশেষে আলীকদমে কলেজ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। এই সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির হাত ধরে এখানে অসংখ্য রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট, সাইক্লোন সেন্টার, অবকাঠামো, প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গভীর নলকূপ, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানেটারি ব্যবস্থা, ভবন ও ব্রিকস সলিং রাস্তা, গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করণসহ সব ধরনের উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে।

জানা যায়, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আলীকদম উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সরকার দল তথা আওয়ামী লীগের পক্ষে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় জনগণকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট প্রদানে প্রভাবিত করবে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম জানান, আমি জুলাই মাস থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এখন পর্যন্ত ৫০টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে, আরও কিছু কাজ চলমান আছে।

আরো জানা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে গত পাঁচ বছরে উল্লেখ্যযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ ও ভবন নির্মাণ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১৫ কোটি ২৬ লাখ টাকায় মাধ্যমিক সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৬ তলা বিশিষ্ট আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানি শোধনাগারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত ও সদরে পানি সাপ্লাই লাইন স্থাপন ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ও নয়াপাড়া ডিপ টিউবওয়েলের ২ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যয়ে পানি সাপ্লাই লাইন স্থাপন। অত্র উপজেলায় প্রায় ১১৭ কোটি টাকায় স্কুল ভবন ও সড়ক নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। গত পাঁচ বছরে আলীকদম উপজেলায় আলোচিত ও পর্যটন, যোগাযোগ, পাহাড়ের জীবনমান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে, তারমধ্যে আলীকদম উপজেলার সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর ১৬ ইসিবি তত্ত্বাবধানে আলীকদম মিয়ানমার সীমান্ত সড়ক বাস্তবায়ন হচ্ছে যার প্রকল্প ব্যয় ৪৪৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

আলীকদম উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত পাঁচ বছরে আলীকদম উপজেলায় ১১৬ কোটি ৪৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। এরমধ্যে ৮০% কাজ সমাপ্ত হয়েছে ২০% কাজ চলমান রয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ত্রিদীপ কুমার ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে আলীকদমে বিগত গত ১৫ বছরে ৬০ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় ছাত্রাবাস, মসজিদ, পাকা সড়ক, কৃষি শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে ৭টি পানি সেচ ড্রেইনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আলীকদম, উন্নয়ন, পার্বত্যমন্ত্রী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন