টেকনাফে সালাম হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলম বহাল তবিয়তে

Alam-1

টেকনাফ প্রতিনিধি:
টেকনাফে মানব পাচারকারীদের হাতে নিহত আব্দুস সালাম প্রকাশ ভাদইম্যা হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ আলম এখনও ধরা পড়েনি। ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হতে চললেও উক্ত হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ আলম ধরা না পড়ায় স্বজনদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, গত ৪ মে সোমবার ভোররাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর লেঙ্গুরবিল গ্রামের গফুর আহামদের পুত্র তিন সন্তানের জনক আবদুস সালাম প্রকাশ ভাদইম্যাকে (৩১) বাড়ির ছাদে ঘুমন্ত অবস্থায় উপুর্যপুরি ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়।

এসময় আবদুস সালাম গরমের কারণে রাতে বাড়ির ছাদে ঘুমিয়ে ছিল। রাত ৩ টার দিকে তার চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে তাকে রক্তাত্ব অবস্থায় নিচে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কক্সবাজার নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এঘটনার পর নিহতের স্ত্রী হাসিনা বেগম বাদী হয়ে ঐদিনই উত্তর লেঙ্গুরবিল গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র মোঃ আলমকে প্রধান আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ মামলার ৩ নং আসামী হারুনুর রশিদ প্রকাশ মুন্নাকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করলেও প্রধান আসামী মোঃ আলম এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।

জানা যায়, মানব পাচারকারী চক্রের পাচারের কবল থেকে নিজের সৎ ভাইকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হলো তাকে। ভাইকে উদ্ধার করলেও সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের রোষাণলে পড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় আব্দুস সালাম।

নিহতের ভাই নুরুল ইসলাম বাবুল জানান, ঘটনার দুই দিন আগে তাদের সৎ ভাই চৌদ্দ বছর বয়সী আব্দুস শুক্কুরকে মালয়েশিয়া পাচার করার পথে মানব পাচারের প্রধান পয়েন্ট সাবরাং হারিয়াখালী এলাকায় চক্রের সদস্য সৈয়দ হোসেনের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আব্দুস সালামসহ তার আত্মীয় স্বজনরা। উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ও সাবরাং হারিয়াখালী এলাকার ইউপি মেম্বার কবির আহমদ ও উক্ত উদ্ধার ঘটনায় সহায়তা করেছিলেন বলে জানায় আব্দুস সালামের পরিবার। ভাইকে উদ্ধার করতে গিয়ে পাচারকারী মোঃ আলমের সাথে আব্দুস সালামের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে আব্দুস সালাম মোঃ আলমকে থাপ্পর দেয়। আর সে ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয় আব্দুস সালামকে।

এমনকি হত্যাকারীরা যখন আব্দুস সালামকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাচ্ছিল তখনও হত্যাকারী মোঃ আলমকে ধরে রাখার চেষ্টা করে এবং চিৎকার দেয়। তার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন বের হলে আব্দুস সালাম তাদেরকে বলে আলম তাকে ছুরি মেরে চলে গেছে।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে আব্দুস সালাম হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ আলমের ধরিয়ে দিলে পরিবারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানিয়েছে ভাই বাবুল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন