নানা সমস্যায় জর্জরিত চাকঢালা মহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা

00

বাইশারী প্রতিনিধি:

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া জনবহুল এলাকায় অবস্থিত চাকঢালা মহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান ১৯৬৯ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মাঝ খানে দু’বার বন্ধ হয়ে যায় এর পাঠ্য কার্যক্রম। ১৯৭৪ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে পূনরায় চালু করা হয় পাঠ্য কার্যক্রম।

প্রবীন মুরব্বিদের মতে, মাদ্রাসাটি বান্দরবান জেলার সর্ব প্রথম ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অবহেলিত জনপদের একমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এখন নানা সমস্যার অন্তরালে নিহিত রয়েছে।

সরজমিনে পরিদর্শন করে ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ৪শত জনের মত শিক্ষার্থী রয়েছে। ১০ জন শিক্ষক মন্ডলী দ্বারা পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এর মধ্যে একজন শিক্ষক খন্ডকালীন।

মাদ্রাসাটির ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. শোয়াইবুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক স্বল্পতা, শ্রেণি কক্ষ সমস্যা, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, ফার্নিচারের অভাব, বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভিজে শিক্ষার্থীদের পাঠদান, পর্যাপ্ত পরিমাণ টয়লেটের অভাব, বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবসহ নানা সমস্যায় রয়েছে মাদ্রাসাটি। তার পরেও তিনি হাল ছাড়েন নি। গেল সমাপনী ও জেডিসি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ, বিগত দিনের দাখিল পরীক্ষায় শতভাগ পাশ করে জেলায় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. সিরাজুল হক বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মাদ্রাসার পাঠ্য কার্যক্রম, পাশাপাশি জাতীয় দিবস, এসেম্বেলি ক্লাশ, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ নানা সহশিক্ষা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, ম্যানেজিং কমিটির দক্ষ পরিচালনায় মাদ্রাসাটি বার বার সফলতা অর্জন করলেও একটি মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে আমি ভাল কিছু করতে চাইলেও পারছিনা। তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসাটির সুনাম নষ্ট করার জন্য বিগত দিনে নবী (সা:) কে নিয়ে কঠুক্তিকারী একজন বহিস্কৃত শিক্ষক নানা ভাবে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে।

পিটিএ কমিটির সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, বহিস্কৃত শিক্ষকের ষড়যন্ত্রে মাদ্রাসাটির উন্নতির পথ বাঁধা গ্রস্থ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিভাবক সদস্য মাওলানা শামশুল আলম বলেন, বর্তমানে মাদ্রাসাটি ভালই চলছে। তবে বহিস্কৃত শিক্ষক বিভিন্ন জায়গায় প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে মাদ্রাসাটিকে ধংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। বিগত দিনে উক্ত বহিস্কৃত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের টাকা আতœসাৎ, জমি বিক্রি, জমি বেদখল করে দেওয়া, নবী করিম (সা:) কে নিয়ে কটুক্তি ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণের দায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বহিস্কার করা হয়।

ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকেরা এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটির নানা সমস্যাসহ ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন