পরিস্থিতির উন্নতি হলে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ‘পুশ ব্যাক’ করা হবে

bandarban-b-j-b-pic-29-12

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ, স্মাগলিং এবং নারী ও শিশু পাচার কমে এসেছে। রিজিয়ন, সেক্টর ও ব্যাটেলিয়ন সংখ্যা বৃদ্ধি, নারী সৈনিক নিয়োগ এবং অবকাঠামো নির্মাণের কারণে সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহষ্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি’র ৮৯তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

বান্দরবান জেলা সদর সংলগ্ন সাতকানিয়া বাইতুল ইজ্জত বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার ও স্কুল প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সমাপনি কুজকাওয়াজে নতুন রিক্রুট ৫০১জন পুরুষ এবং ৯৩জন নারী পবিত্র ধর্মগ্রন্থ স্পর্শ এবং শপথ বাক্য পাঠের মধ্য দিয়ে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত রক্ষায় সরকারের মনযোগিতার কারণে ৪টি রিজিয়ন, ৫টি সেক্টর এবং ১৫টি নতুন ব্যাটেলিয়ন সদর দপ্তর স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সীমান্ত প্রহরা কার্যক্রম সমন্বয় সাধন এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে নারী সৈনিক নিয়োগের কারণে নারী স্মাগলারদের দেহ তল্লাশী এবং সীমান্ত অতিক্রমকারী নারীদের সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় স্মাগলিং এবং নারী পাচার হ্রাস পেয়েছে। এটিকে শুণ্যের কোঠায় নিয়ে আসাটাই এখনকার মূল চ্যালেঞ্জ।

মহা পরিচালক বলেন, সীমান্তে নতুন বিওপি নির্মাণের পাশাপাশি সীমান্ত সড়ক নির্মাণ, হেলিকপ্টার ব্যবহার ও সীমান্তে পাহারা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সীমান্তে রোহিঙ্গ্যা অনুপ্রবেশে আগের চেয়ে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রন আনা সম্ভব হলেও মানবিক বিষয় হওয়ায় পুরোপুরি অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে যেসব রোহিঙ্গ্যা নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি হবার সাথে সাথেই পর্যায়ক্রমে তাদেরকে মায়ানমারে ‘পুশ ব্যাক’ করা হবে।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারত ও মায়ানমারের ৪৭৯ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭০ কিলোমিটারে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। অবশিষ্ট ১০৯ কিলোমিটারেও প্রহরা জোরদার করা হয়েছে।

বিজিবি’র নব নিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন এর আগে নবীণ সৈনিকদের প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। এসময় বিজিবি ট্রেনিং সেন্টার ও স্কুলের কমান্ডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম সাইফুল ইসলাম অভিবাদন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

নবীণ রিক্রুটদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ বাজি রেখে যুদ্ধ করে বিজিবি’র দু’জন বীর শ্রেষ্ঠ, ৮জন বীর উত্তম, ও ৩২জন বীর বিক্রম এবং ৭৭জন বীর প্রতীক পদক অর্জনের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বিশ্বের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নবীন রিক্রুটরা আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে এ বাহিনীর গৌরব অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবেন।

সফলতার সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতায়  পুরুষদের মধ্য বদিয়ার আলম এবং নারীদের মধ্যে স্মৃতি আকতার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। বিজিবি মহাপরিচালক তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।

সমাপনী কুচকাওয়াজে বান্দরবান রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল যোবায়ের সালেহীন, বিজিবি’র উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন (রংপুর) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরীয়ার আহমেদ চৌধুরী এবং বান্দরবানের বোমাং রাজা উচপ্রুসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন