পানছড়ি বাজারে অগ্নিকাণ্ডের নির্মম ট্র্যাজেডি

24.7 14 PIC

শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি:

ঈদের বাজার তাই পানছড়ি উপজেলায় সদর বাজার ব্যবসায়ীরা নিজ প্রতিষ্ঠানকে সাজিয়েছিল নব বধুর সাজে। দিনের বেলায়ও ছিল সবার চোখে মুখে স্বস্তির হাসি। হয়তো কাল আরো বেশী বিক্রি হবে। এবারের ঈদে পাখি জামার প্রচুর চাহিদা তাইতো এসব মডেল বেশীর ভাগ শোভা পাচ্ছিল দোকানের সামনের সারিতে বাদুর ঝুলা ঝুলে।

ক্রেতারা এসে ধরে দেখে, দাম কত জিজ্ঞাস করে তারপর রং মিলিয়ে কিনে নেয় পছন্দের পাখি জামা। এভাবে গত দু’তিন দিন চলছিল পানছড়ি বাজারের দোকানীদের হাল-চাল। কিন্তু মঙ্গলবার রাত বারটায় দুই ঘন্টার এক তান্ডবে সবি ছিন্ন ভিন্ন। পানছড়ি বাজার পাহারাদার সাহাব মিয়ার পাগলা বাঁশি ও মসজিদের মাইকে আগুন আগুন চিৎকারে সবাই ছুটে এলেও চোখের পলকে স্বল্প সময়ে মরুভুমি বানিয়ে হাজারো মানুষের কণ্ঠে ইস্ ও হাহাকার ধ্বনি ধরিয়ে দিল আগুনের এক নিষ্ঠুরতম তান্ডবে। রেহাই পায়নি হলুদের আড়ত, আইসক্রীম ফ্যাক্টরী, এসিআই ঔষধের গুদাম, সিমেন্ট গুদাম, গার্মেন্টস, টেইলার্স ও কাপড় দোকান সহ প্রায় ষাটটির অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

সকাল নয়টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারো ট্র্যাজেডি। বুড়ো বাবা-মা কাঁদছে ছেলের বুক জড়িয়ে, ভাই কাঁদছে ভাইয়ের বুক জড়িয়ে আর স্বামী কাঁদছে স্ত্রীকে ধরে। অনেকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, আশা, পদক্ষেপ, গ্রামীন ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক থেকে লোন নিয়েই দোকান সাজিয়েছে ঈদের সাজে। এখন কিভাবে চালাবে সমিতির কিস্তি আর কিভাবে চালাবে সংসারের খরচাদি কিভাবে মিটাবে ছেলে-মেয়ের ঈদের বায়না। ক্রেতারা নিজেরাও হতবাক! কাল কি দেখলাম, আজ কি হলো। তাইতো থমকে গেছে প্রত্যন্ত সীমান্ত ঘেষা পানছড়ির ঈদ বাজার। তাদের শোকে শোকাহত পুরো উপজেলাবাসী। তাইতো সান্তনার বানী নিয়ে ছুটে আসছে প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বসাধারণ।

পানছড়ি বাজারের বিশালাকার জায়গা জুড়ে এখন শুধু হাহাকার মরুভূমি। প্রাণের সঞ্চার পেয়ে আবার আগের মত সেজে উঠুক পানছড়ি বাজারের হারিয়ে যাওয়া গলির দোকানগেুলো এ সহমর্মিতা কামনা করছেন সবাই।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন