পেকুয়ায় আ’লীগ সভাপতি ফরায়েজীকে হত্যার ঘটনায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, আটক ৫

স্টাফ রিপোর্টার,পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা ও চকরিয়া কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক বিপি আ ক ম সাহাবউদ্দিন ফরায়েজীকে নির্মম ভাবে হত্যার করার ঘটনায় ১৭ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে রাতেই উপজেলা আ’লীগের প্রয়াত সভাপতি আ ক ম সাহাবউদ্দিন ফরায়েজীর পুত্র উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান ফরায়েজী বাদী হয়ে টইটং ইউপির মেম্বার শাহাদত হোসেন এম ইউপিকে প্রধান আসামী করে ১৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরো অজ্ঞাত আসামী দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

পেকুয়া থানার ওসি আবদুর রকিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হত্যা মামলা রেকর্ড করেন। যার নং ৯/১০.১০.১৫। আসামীদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে অন্যান্য আসামীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আর এ ঘটনায় এজাহার নামিয় ৫ আসামীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন টইটং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি এলাকার বদিউল আলমের পুত্র জাফর, নাপিত খালী এলাকার ছৈয়দ নুরের পুত্র মাহমুদুল করিম, বটতলী মালগরা এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের স্ত্রী শামারু বেগম, হিরাবুনিয়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে সি এন জি অটোরিক্সা চালক জসিম উদ্দিন, ফরায়েজীর প্রতিবেশী হাইকোটের আইনজীবি সহকারী মৃত একরাম মিয়ার পুত্র নেজামত উল্লাহ।

মামলার এজাহারে বাদী মেহেদী হাসান ফরায়েজী উল্লেখ করেছেন গত মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম টইটং নাপিতখালী এলাকার জাকের হোসেনের পুত্র শাহাদাত মেম্বারের নেতৃত্বে একদল দূর্বত্ত তার পিতাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আর দিকে ঘটনার হত্যা মামলা রেকর্ড হওয়ার খবর ছড়িয়ে গেলে টইটং এলাকার সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে মামলায় নিরহ ব্যক্তিদের আসামী হয়রানী করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে আ’লীগ সভাপতির হত্যার রহস্য খোজতে পুলিশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হয়ে হলেও এ ধরণের আলোচিত হত্যাকান্ডের জট খোলেনি। কিন্তু সভাপতির হত্যার ঘটনার সুষ্ট তদন্ত দাবী করে যাচ্ছে উপজেলা আ’লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ, স্মরণসভা ও খতমে কোরআন এবং দোয়া মাহফিল অব্যাহত রেখে উপজেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দরা।

সে সাথে বসে নেই উপজেলা বি এন পির নেতৃবৃন্দরা। তারাও উক্ত ঘটনার সুষ্ট তদন্তপূর্বক হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।

জানা যায় গত ৭ অক্টোবর সকালে টইটং ইউনিয়নের বটতলী মালগারা চরায় উপজেলা আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা আ ক ম সাহাব উদ্দিন ফরায়েজী (৫৫) এর লাশ দেখতে পেলে পেকুয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। সকাল সাড়ে ৭ টায় দিকে পেকুয়া থানার ওসি আবদুর রকিবের নেতৃত্বে সঙ্গী ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা আ’লীগের সভাপতির বাড়ীতে নিয়ে যায়। লাশ উদ্ধারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে গেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন গিয়ে সভাপতিকে এক নজরে দেখার জন্য ভিড় জমায়।

এদিকে স্থানীয়রা জানান বজ্রপাতে ওনার মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে পরিবারের পক্ষে সভাপতি আ ক ম সাহাব উদ্দিন ফরায়েজীর পুত্র উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান ফরায়েজী দাবী করেন তার পিতা মঙ্গলবার সিরাদিয়া খুনের ঘটনা নিয়ে থানায় যাওয়া কথা বলে ঘর থেকে বের হয়। পরে ঘরে এসে আছরের নামাজ পড়ে আবার ঘর থেকে বের হওয়ার পর রাত ৮ টার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওনার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পরিবারের মাঝে দেখা দেয় চরম অজানা উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ছিল। ওনাকে শাসরুদ্ধ করে এবং এসিড় নিক্ষেপ করে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে চড়ায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। এসময় তার মুখ মন্ডল বিকৃত গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। তাহার গোপানঙ্গে আঘাতের দাগ রয়েছে।

এদিকে পেকুয়া থানার ওসি আবদুর রকিব আ’লীগ সভাপতি সাহাব উদ্দিন ফরায়েজী হত্যা মামলা রেকর্ড করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান সভাপতির ছেলে মেহেদী ফরায়েজী বাদী হয়ে একটি এজাহার জমা দেয়। সেটি মামলা হিসাবে রেকর্ড করি। তবে বাকী আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন