পেকুয়ায় জেডিসি পরীক্ষার্থী খাদিজার কাবিননামা সম্পন্ন

kadisa

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া:
পেকুয়ায় জেডিসি পরীক্ষার্থী খাদিজা বেগম (১৪) এর কাবিননামা সম্পাদন হয়েছে। বাল্য বিয়ের জন্য ওই ছাত্রীকে তার অভিভাবকরা এক প্রকার বাধ্য করেছেন। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাকে সঁপে দেওয়া হবে বরের হাতে।

গত কয়েকদিন আগে ওই কোমলমতি শিক্ষার্থীকে বাল্য বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে ঠিক ফর্দ চুড়ান্ত করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক বিয়ের অংশ হিসেবে মেয়ের বাড়িতে এনগেজমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে। দু’পরিবারের সদস্য ছাড়াও এনগেজমেন্টে বরের ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, খাদিজা বেগম (১৪) পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সবজীবন পাড়া এলাকার নুরুল আমিনের মেয়ে ও বারাইয়াকাটা ফাজিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর অধ্যয়নরত নিয়মিত ছাত্রী। সে চলতি ২০১৫ সালের অনুষ্টিত জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থী। আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ওই শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনুষ্টিত জেডিসির সবকটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

অপরদিকে তাকে বাল্য বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে বাধ্য করছেন তার পিতামাতা। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বিয়ে করতে রাজি নন ওই ছাত্রী। কিন্তু বাধসাঁধে তার মাতাপিতার অজ্ঞতার কারণে। তারা চায় না তাদের মেয়েটি অন্য শিক্ষার্থীদের ন্যায় লেখাপড়ার মাধ্যমে জগতকে আলোকময় করুক।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে খাদিজা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। প্রাথমিক স্তর থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সে সব পরীক্ষায় মেধার জানান দিয়েছে। তার হবু বরের নাম মো.রিদুয়ানুল হক(২৮)। তিনি চট্টগ্রাম জেলার বাশখালী উপজেলার ছনুয়া ছালেহ আহমদ সিকদার পাড়ার মৃত.নুরুল হকের পুত্র। পেশায় একজন লবণ চাষী।

গত ৬ অক্টোবর রাতে ওই ছাত্রীর কাবিন সম্পাদন হয়েছে। বয়স ১৪বছর হলেও তথ্য গোপন করে জন্ম সনদে বিয়ে উপযুক্ত দেখিয়ে রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করেছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় ইউপি কার্যালয় টাকার বিনিময়ে পুর্ণ বয়সের জন্ম সনদ সরবরাহ করেছে। নিকাহ রেজিষ্ট্রি কার্যালয় ও পরিষদের যোগসাজসে ওই মেধাবী শিক্ষার্থীকে অকাল প্রণয়ের দিকে ধাবিত করেছে। মোট মোহরনা ৪লক্ষ টাকা। মেয়ে পক্ষ যৌতুক হিসেবে ১লক্ষ টাকা বরকে দেবে।

জানা গেছে চলতি জেডিসি পরীক্ষা শেষে খুব শীঘ্রই বিয়ের আনুষ্টানিকতা শেষ করা হবে। শিক্ষার্থী খাদিছাকে তুলে দেয়া হবে হবু বরের হাতে। ওইদিন এনগেজমেন্ট অনুষ্ঠানে বরের মেহমান হিসেবে কনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছিলেন ছনুয়া ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম চৌধুরীসহ দু’পরিবারের সদস্য ছাড়াও গন্যমান্য ব্যক্তিরা।

এ ব্যাপারে জানতে বারাইয়াকাটা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও বারবাকিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এ.এইছ.এম বদিউল আলম জিহাদি বলেন আমি খোঁজ খবর নেব। বিষয়টি সত্য হলে অবশ্যই আমার পক্ষ থেকে ছাত্রীর শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে আনতে যা যা করার করব।

কক্সবাজারের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাফিয়া বেগম বলেন, বিষয়টি আমি পেকুয়ার ইউএনও ও ওসিকে বলব ব্যবস্থা নিতে।

এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মারুফুর রশিদ খান বলেন, আমি খোজ নিচ্ছি। যদি সেটি হয়ে থাকে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবো। 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন