পেকুয়ায় সন্ত্রাসীদের দু’গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ, শিশুসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ

1456308796317_resized

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের টেকঘোনা পাড়া গ্রামে বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে কমপক্ষে শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে বাড়ির ছাদে শিশু পুত্রকে নিয়ে খেলা করার সময় দেড় বছরের শিশু মো. আবিরসহ তার পিতা মো. আইয়ুব আলী (৩৫) ও ইমরান নামে নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গুরুতর আহত দেড় শিশু ও তার পিতার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাদের চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

পেকুয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শিশু আবির এর মাথা এবং তার পিতার মাথা ও হাত গুলির আঘাতে জখম হয়েছে। এদিকে পুলিশ গুলি বিনিময়ের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’পক্ষের লোকজনকে লাঠিচার্জ করে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় নাসির নামের ১জনকে আটক করা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, রাজাখালী টেকঘোনা গ্রামের আহমদ ছফার পুত্র রফিক আহমদ ও ছৈয়দ মিয়ার পুত্র আজমের লোকজনের মধ্যে গত তিন দিন আগে স্থানীয় একটি শালিসি বৈঠক নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। ঘটনার দিন বুধবার ওই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আবারো দুই পক্ষ মুখামুখি হয়। ওই সময় দু’গ্রুপের মাঝে বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়।

অস্ত্রের ব্যবহারে এলাকার সাধারণ জনগণ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নেয়। দু’পক্ষের সন্ত্রাসী লোকজন অন্তত ৫০/৬০ রাউন্ড গুলিবিনিময় করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ওই ৩জন আহত হয়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে কিছু সময় গুলিবিনিময় বন্ধ হলেও পুলিশ চলে যাওয়ার সাথে সাথে আবারো গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পরে বিকাল ৫ টার দিকে ৩য় দফায় আবারো দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে আবারো পেকুয়া থানা ও রাজাখালী পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

আরো জানা গেছে, রফিক গ্রুপের পক্ষে বাদশা, নেজাম উদ্দিন, অলী আহমদসহ ৩০/৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। তাদের হাতে রয়েছে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ ধারালো কিরিচ। অপরদিকে, আজম গ্রুপে জাহাঙ্গীরসহ রয়েছে ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল। বিগত ৩ মাস আগেও তারা আধিপত্য বিস্তারে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করেছিল। সর্বশেষ তাদের অস্ত্রের হাত থেকে দেড় বছরের অবুঝ শিশুও রক্ষা পায়নি। মানবতা ও মানবাধিকার যেন লুন্ঠিত হচ্ছে কিছু সন্ত্রাসীর হাতে। এলাকাবাসীর দাবি এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সকল লোককে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি (প্রশাসন) জিয়া মোহাম্মদ মুস্তাফিজ ভুইয়া জানিয়েছেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং ১জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বাকি জড়িতদেরকে আটক করতে পুলিশ জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন