বান্দরবানে পাহাড় ধসে শিশু নিহত, আহত ৪

Bandarban pic-2, 20.8
স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানে টানা দু’দিনের ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসে সাজিদ হোসেন(৩) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। এতে একই পরিবারের ৩জনসহ আহত হয়েছে ৪জন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে শহরের নিউ গুলশান এলাকায় এঘটনা ঘটে।

শিশু সাজিদ হোসেন স্থানীয় দিনু ইসলামের ছেলে। মা নিলু (৪০), সানজিদা (১৩) ও তানজিদা (১০) মাটি চাঁপায় আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত নানী শৈমে (৫০)কে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

দমকল বাহিনী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহরের নিউ শুলশানের কাটাপাহাড় এলাকায় ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস হয়ে একটি কাঁচা বাড়িতে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত অবস্থায় ৩বছরের শিশুপুত্র সাজিদ হোসেনকে উদ্ধার করে এবং আহত অবস্থায় মা ও দু-শিশুসহ সাজিদ হোসেনের নানীকে উদ্ধার করে। গুরুতর আহত নানী শৈমেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এছাড়া প্রায় একই সময়ে বনরূপা পাড়াতেও পাহাড় ধসের ঘটনায় দুইটি ঘর মাটিচাপা পড়েছে। তবে এ ঘটনায় সেখানে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) রফিক উল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অবিরাম ভারি বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। নিউ গুলশান এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনায় এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী এবং পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরে গিয়ে সবাইকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে ২৫ হাজার এবং আহত দুজনকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেছে। জেলার রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার থেকে টানা বর্ষণের কারণে বান্দরবান শহরের মেম্বারপাড়া, ইসলামপুর, আর্মিপাড়া এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে, বন্যার কারণে পানিবন্দি হয়ে আছে শত শত মানুষ। জেলা শহরের পলুপাড়া এলাকায় একটি ব্রিজ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে জেলার সঙ্গে রাঙামাটির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। টানা বর্ষণে সড়ক পথ প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা থাকায় যেকোন সময় জেলার সঙ্গে চট্টগ্রাম তথা সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র জাবেদ রেজা জানান, বান্দরবান শহরের স্কুলগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে, সেখানে বন্যা দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন