বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, জেনে নিন লক্ষণ ও প্রতিকার

fec-image

দেশে বেড়েই চলছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। পুরো ঢাকাসহ সারাদেশে ভয় ধরাচ্ছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু সম্পর্কে ভালোভাবে না জানার কারণে অনেকে বিপদে পড়ছেন, হারাচ্ছেন প্রাণও। তাই আসুন জেনে নিই ডেঙ্গুর লক্ষণ ও এ থেকে প্রতিকার পাবার উপায়।

যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত
এ ব্যাপারে ঢাকার ‘ফারাজি ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটাল লিমিটেড’-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডা. ইব্রাহীম মাসুম বিল্লাহ বলছেন, ডেঙ্গু জ্বর হলে সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। শরীরে তীব্র ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গায়ে র‌্যাশ ওঠা বা লালচে দানা আসা ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ। এছাড়া রোগীর বমি বমি ভাব, অরুচি, ডায়রিয়া, দাঁতের মাড়ি বা নাক বা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হওয়া, গলা ব্যথা, ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া- এসবও ডেঙ্গুর লক্ষণ। ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা কামড়ানোর তিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর শুরু হয়। তাই দুই-তিন দিনের বেশি জ্বর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু রোগীকে কখন হাসপাতালে নিতে হবে?
ডেঙ্গু রোগীর কিডনি কিংবা লিভারে সমস্যা, পেট ব্যথা, বমি অথবা অন্তঃসত্ত্বা, অথবা জন্মগত যদি কোনো সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। অনেক সময় রোগীর জন্য আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের প্রয়োজন হতে পারে। এর বাইরে জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে যদি কোনো রোগীর দাঁতের মাড়ি বা নাক বা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়, সারাদিন যে পরিমাণ প্রস্রাব হতো, তার পরিমাণ যদি কমে যায়, শ্বাসকষ্ট হলে দেরি করা উচিত নয়। ভর্তি করাতে হবে হাসপাতালে।

ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম থেকে মানবদেহে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পাল্‌স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।

ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা এবং সাবধানতা:
ডেঙ্গু হলে ওষুধ হিসেবে শুধু প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। অনেকে না জেনে শরীরের বিভিন্ন অংশের তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিপদ ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। কারণ, ব্যথানাশক ওষুধ শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটাতে পারে। যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যু। বরং এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যেমন- ভাতের মাড়, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, লেবুর পানি ইত্যাদি। তরল খাবার ৯০ শতাংশ কমায় ডেঙ্গুর তীব্রতা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার ডাল, ডিম, মুরগির মাংস, ছোট মাছের ঝোল বেশি করে রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

পেঁপে পাতার রস খেলে প্লাটিলেট বাড়ে- এমন একটি কথা প্রচলিত আছে। এ তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। উল্টো পেঁপে পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা সমস্যার কারণ হতে পারে। কোনো কারণে রোগীর প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে চিকিৎসক চাইলে রোগীকে প্লাটিলেট বা ফ্রেস ব্লাড দিতে পারেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু, রোগ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন