মানবাধিকার কমিশনকে ধন্যবাদ ও ক্ষোভ একই সাথে জানালো সমঅধিকারের একাংশ

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
আদিবাসী বিষয়ক বক্তব্যেও জন্য মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানকে একই বিবৃতিতে ধন্যবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছে সমঅধিকার আন্দোলন ও সমঅধিকার ছাত্র আন্দোলনের একাংশের রাঙামাটি জেলার নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সংবিধান অনুযায়ী উপজাতিদেরকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলায় বৈধ- বলে স্বীকার করায় তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আবার একইসাথে উপজাতিদেও আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি দাবী করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।   

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা দৈনিক কর্ণফুলী, পার্বত্য নিউজ ডট কম, বার্তা লাইভ ২৪ ডটকমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি গত ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় পুলিশ ও বি,জি,বি সদস্যেদের নিয়ে মানবাধিকার বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী উপজাতীয়দেরকে ক্ষুদ্র-নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী বলা বৈধ এবং যৌক্তিক সত্য। বস্তুনিষ্ঠভাবে মানবাধিকার কমিশন এই তথ্যটি স্বীকার করায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলন ও সম-অধিকার ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানানো হল। পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায়, পার্বত্য অঞ্চলের স্থিতিশীল পরিস্থিতি বজায় থাকা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে সংবিধান পরিপন্থী সকল কার্যক্রম পরিহার করার জন্য ড.মিজানুর রহমানকে অনুরোধ করছি।

রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত রাষ্ট্রেরই একটি প্রতিষ্ঠান মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান নিজেই আবার সংবিধানকে অবজ্ঞা করে উপজাতীয় ক্ষুদ্র-নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করায় আমরা ক্ষোভে মর্মাহত। ড. মিজানুর রহমান ভাল করে জানেন আদিবাসী স্বীকৃতিতে দেশের অস্তিত্বের উপর চরম ভয়াবহতা নেমে আসবে। এবং এটা দেশের সংবিধান বিরোধী একটা দাবি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আমরা জানিনা দেশ ও আন্তর্জাতিক কোন চক্রান্তের প্ররোচনায় তিনি আধিবাসী স্বীকৃতি দাবি করছেন। উপজাতী হলেই আদিবাসী বলতে হবে এমন বিধান বিশ্বের কোনো আইনে আছে বলে আমাদের জানা নাই। আমরা মনে করি সরকারের যদি বোধ শক্তি থাকে তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দের চর্চা চিরতরে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা উচিত। অবৈধ তিনটি সশস্ত্র গ্র“পের অস্ত্রবাজিসহ চাদাঁবাজি, গুম, হত্যা, নির্যাতনে কারনে পার্বত্যাঞ্চলে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার সংস্থার উচিত এসব প্রতিকারে সোচ্ছার হওয়া। অশান্ত, বিশৃঙ্খলা, সৃষ্টিকারী চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত এইসব অবৈধ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে দেশীয় আšর্জাতিকভাবে মানবাধিকার কমিশনের তথা ড. মিজানুর রহমানের মতো মানুষের প্রতিবাদী হয়ে উঠা উচিত।

সমঅধিকার আন্দোলন একাংশের রাঙামাটি জেলা সভাপতি পেয়ার আহম্মদ খানের পাঠানো এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, ড.মিজানুর রহমান কি জানেন না ভূমি কমিশন আইন এর তরফা বাস্তবায়নে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। পার্বত্যাঞ্চলের সম্প্রদায়িক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হবে। যা সরকারের সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে পরবে। আমাদের প্রশ্ন জাগে মানবাধিকার কমিশন কি পার্বত্য অঞ্চলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আসে নাকি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কার্যক্রমকে উষ্কানি দিতে আসে। একতরফা ও বিশেষ গোষ্ঠীর সাথে গঠিত ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন কখনো বাস্তবায়ন হতে পারবে না। এটি শুধু অশান্তি ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ দিতে পারবে। কাজেই সংবিধান পরিপন্থি এক তরফা বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থে গঠিত ভূমি কমিশন আইন সরকারকেই বাতিল করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন