রমজানের শুরুতেই খাগড়াছড়ির কাঁচা বাজারে আগুন: বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

index
এম. সাইফুর রহমান:  
শুক্রবার থেকে পালিত হচ্ছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কঠিন সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমযান। আর মাহে রমযানকে ঘিরে চলছে নানা আয়োজন। বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরা ও রকমারী দোকানগুলোতে এখন সাজ সাজ রব। জেলা-উপজেলার বিভিন্ন দোকান-পাটে চোখে পড়ছে অপ্রয়োজনীয় আলোক সজ্জায়।

এতে করে একদিকে বিদ্যুৎ ঘাটতি হচ্ছে, আর তা পুষিয়ে নিতে ভোক্তা গ্রাহকদের গলায় ছুরি চালিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্র্রব্যের দাম বাড়তি রাখছে বিক্রেতারা। তাই ক্রেতা সাধারণকে রমযানের বাজারকে ঘিরে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

ইবাদত বন্দেগী, পবিত্রতা, আত্মসংযম ও সিয়াম সাধনার এ মাসই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের বাড়তি আয়ের বিশাল সুযোগ। খাগড়াছড়ির নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর বাজার ঘুরে এমনটি লক্ষ্য করা গেছে। এমনিতেই প্রতি মুহুর্তে দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া ছুটছে উর্ধ্বমুখে। রমযান উপলক্ষ্যে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে ব্যাপক হারে। কারণ রমজান মাসে এদেশে দাম বাড়া এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, বেগুনের কেজি ৬০টাকা। পূর্বের তুলনায় বেড়েছে ৩৫টাকা। কাঁচা মরিচের দাম ১০০টাকা রমযানকে ঘিরে দাম বেড়েছে ৩০টাকা। শুধু তাই নয়, ছোলা, মুড়ি, গাজর, শসা, টমেটো সহ বিভিন্ন কাঁচা পণ্যের দামও আকাশ ছোঁয়া। ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। তাই পবিত্র মাহে রমযানে অনাহারে অর্ধাহারে দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে শত সহস্র দরিদ্র পরিবারকে। অন্যদিকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী।

বাজার ঘুরে জনৈক ক্রেতার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, রমযানের সময় বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি প্রয়োজন দেখা দেয়। চাহিদা ও যোগানের চিরসত্য সূত্র ধরে দাম বৃদ্ধি পেয়ে থাকে তা স্বাভাবিক। অনেক সময় দেখা যায়, চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করা হয় উচ্চ মূল্যে। রমযানকে ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বাড়তি মুনাফার লোভে পবিত্র মাসেও হটকারিতার আশ্রয় নিচ্ছে।

অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছে ভিন্নকথা। একাধিক বিক্রেতার সাথে আলাপকালে তারা জানান, রমযান মাসে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন না হওয়ায় সরবরাহ কম থাকে। যার ফলে ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষকদের বাড়তি মূল্য দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় এসব দ্রব্য সংগ্রহ করতে হয়। এতে করে অন্যান্য মাসের তুলনায় রমযান মাসে স্বভাবত একটু দাম বেড়েই থাকে।

বর্তমান সরকার রমযানে বাজার দর নিয়ন্ত্রণে রাখাতে ভ্রাম্যমান আদালতসহ ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে এত কিছুর পরও কতিপয় কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে বাজার দর স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। মফস্বলে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে বাজার দর স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হতো।

তাই পবিত্র মাহে রমযানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সহনশীল রাখার জন্য সরকারের উর্ধ্বতন ও মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগি জনসাধারণ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন