রাঙামাটিতে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসবের জন্য প্রস্তুত রাজবন বিহার

fec-image

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তর বৌদ্ধ মন্দির রাঙামাটির রাজবন বিহারে ৩-৪ নভেম্বর দু’দিনব্যাপী পার্বত্যাঞ্চলের সর্ববৃহৎ দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। দানোৎসবকে ঘিরে পুরো পাহাড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।

এ দানোৎসবে তিন পার্বত্যজেলার বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি অনেক বিদেশি বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এবং ধর্মযাজক এ উৎসবে যোগ দিবেন।

বিহারের আশ-পাশ পরিষ্কার-পরিছন্ন, সাজ-সজ্জা, বেইন ঘর প্রস্তুতি এবং প্যান্ডেল সাজানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পূর্ণাথীরা যাতে শান্তি নির্বিঘ্নে পূজা অর্চনার কাজ শেষ করতে পারে তার জন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো বিহার এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা ।

পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবে। মেডিকেল টিম ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবীরা শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত থাকবে।

রাঙামাটি রাজবন বিহার শাখার উপাসক-উপসিকা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কঠিন চীবর দানোৎসবের জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। বিহার এলাকায় সাজ-সজ্জার কাজ চলছে। আগামীকালের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। ৩ নভেম্বর থেকে সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হবে পুরো মন্দির এলাকা এবং ৪ নভেম্বর চিবর দানের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ে মাসব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব কঠিন চিবর দানের পরিসমাপ্তি ঘটবে।

বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস থেকে জানা গেছে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে প্রচলন হয় কঠিন চীবর দান। গৌতম বুদ্ধের তৎকালীন শীর্ষ বিশাখা দেওয়ান ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে সে সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে কোমর তাঁতে চীবর বুনে তা গৌতম বুদ্ধকে দান করেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। চীবর হচ্ছে ভিক্ষুদের পরিধেয় বিশেষ রঙিন কাপড়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির কঠিন কাজটি সম্পাদন করতে হয় বলে একে কঠিন চীবর দান বলা হয়। বৌদ্ধদের বিশ্বাস, কঠিন চীবর দান করতে পারলে ইহকাল ও পরকালে নির্বাণ তথা মুক্তি লাভ করা সম্ভব। পার্বত্য এলাকার বৌদ্ধরা এ উৎসব পালন করে প্রাচীন নিয়মে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কঠিন চীবর দান, রাঙামাটি, রাজবন বিহার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন