রামু-নাইক্ষ্যংছড়ির ১০১ গ্রামে বিদ্যুৎ নেই ৬দিন: সংযোগ খুঁটি ও ট্রান্সফমারসহ ক্ষতি ৩০ লক্ষাধিক টাকা

Biddot copy
মো.আবুল বাশার নয়ন:
ঝড় ও টানা ৪৮ ঘণ্টার বন্যায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ায় ৬দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর ও রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে দুই উপজেলার কয়েক লাখ বাসিন্দা। এসব বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিহীন ৬দিন পার করলেও কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগ।

জানা গেছে, গত ২৪ জুন রাতে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কে ৩৩কেবি লাইনে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়াসহ গাছের ঢাল-পালায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে নাইক্ষ্যংছড়ি ও রামু দুই উপজেলার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। পরবর্তী রামু উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করতে পারলেও কাউয়ারখোপ, নাইক্ষ্যংছড়ি, কচ্ছপিয়া এলাকায় এখনো পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়নি।

এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে কচ্ছপিয়ার ১৮ গ্রাম, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ২৬ গ্রামসহ নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৫৭গ্রামের সাধারণ মানুষ।

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ জানান, বন্য কবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়েছে মানুষ। এছাড়াও বিদ্যুৎ উপর নির্ভরশীল খেটে খাওয়া মানুষগুলোও জীবনযাত্রায় ব্যঘাত ঘটছে বলে তিনি মনে করেন।

কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তুলাতলী এলাকার টমটম চালক নুরুল হক জানান, বন্যায় বসতবাড়িতে পানি ঢুকে তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় একমাত্র জীবিকার বাহন টমটম গাড়িতে চার্জ দিতে না পারায় পরিবার পরিজনের আহার যোগানেও হিমশিম খাচ্ছি’’। এমন অভিযোগ শুধু টমটম চালকের নয়। এলাকার প্রায় সব মানুষের।

নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাইক্ষ্যংছড়ি থানা, বিএলআরআই, গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়িসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে বিদ্যুৎ সমস্যা তুলে ধরে তারা জানান, বিগত প্রায় ৬দিন বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের সেবা প্রদানেও সমস্য তৈরি হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ক্যাশিয়ার মো: আবুল কালাম ও গর্জনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম আক্ষেপের সুরে বলেন, সামন্য ঝড় বৃষ্টি হলেই আমাদেরকে ২/৩ দিন বিদ্যুৎ ছাড়াই থাকতে হয়। গত ২২ এপ্রিল মাসেও টানা ৪দিন বিদ্যুৎ ছিল না এ অঞ্চলে। আর এমন ভোগান্তির কথা জেনেও এর স্থায়ী সমাধানে বিদুুৎ বিভাগের তেমন কোন তৎপরতা নেই বলে তারা অভিযোগ করেন।

তবে মঙ্গলবার বিকালে রামু বিদ্যুৎ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, বন্যায় রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। এ সড়কে প্রায় ৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙ্গে যাওয়াসহ সংযোগ লাইনে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লাইনে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কাজ শুরু করা যায়নি। ১ জুলাই থেকে ঠিকাদার কাজ করার কথা রয়েছে। কিন্তু বৈদু্তিক দপ্তরে লোকবল কম থাকায় সংযোগ লাইন স্থাপনে আরো ৪/৫দিন সময় প্রয়োজন হতে পারে। এরপরও সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগ বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং তিনি সার্বক্ষণিক দেখভাল করেছেন বলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment
আরও পড়ুন