শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানালেন সন্তু লারমা

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা।

চুক্তির ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সন্তু লারমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়নের ক্ষেতে আজকে যে দীর্ঘসূত্রতা, তা নিয়ে নানাজনের নানা মত-পর্যালোচনা থাকলেও আমি মনে করি, এই চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী।

তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ক্রমাগত ঘনীভূত হচ্ছে। গত ২৬ বছর পর্যন্ত পার্বত্যবাসী যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নের আশায় ছিল, সে আশা আর রাখতে পারছে না।’

জেএসএসের সভাপতি বলেন, ‘আমাদের দেশের সরকার ও শাসকগোষ্ঠী এই চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাঁদের বর্তমান যে অবস্থান, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সচেষ্ট হবেন। যদিও সেই কামনা বাস্তবতায় রূপ নেবে না, তবু আমি কামনা করি। তবু আমি সেই আশা-আকাঙ্ক্ষার দিকটাকে বজায় রাখতে চাই।’

এছাড়া চুক্তি সম্পাদনের ২৬ বছর পূর্তিতে সন্তু লারমা দেশের সরকার ও শাসকগোষ্ঠীর কাছে চুক্তি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ওই দিন স্বাক্ষরিত হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি। এর ফলে অবসান হয়েছিল দেশের এক-দশমাংশ এলাকার সশস্ত্র লড়াইয়ের।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তখনকার জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। আর জেএসএসের পক্ষে সন্তু লারমা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ৭২টি ধারা। চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেতে সরকার বলছে, ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি বাস্তবায়িত হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, জেএসএস বলছে, চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলোই এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। চুক্তির এ অবস্থা নিয়ে জেএসএসের প্রধান সন্তু লারমা বেশ কয়েক বছর ধরেই তাঁর ক্ষোভ ও কষ্টের কথা প্রকাশ্যেই বলে আসছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের কো-চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল জানান, চুক্তির মধ্য দিয়ে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থামানো গেলেও চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে উচ্ছ্বসিত হতে পারছেন না তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: শান্তিচুক্তি, সন্তু লারমা, সরকার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন