হিংসার আগুনে পুড়ছে পাহাড়ের পর্যটন

fec-image

সেনাবাহিনী তার লজিস্টিক শক্তিতে নিশ্চিত নিরাপত্তা বিধান করার কারণে নীলগিরি বা সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সারাদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরা সহজ হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আজ হুমকি দিচ্ছে এই সম্ভাবনার দ্বার বন্ধ করে দিতে।

‌’যখন পথ চলা কঠিন হয়, তখন কঠিন লোকেরাই পথ চলতে থাকে।’ আমাদের প্রশিক্ষণ মাঠে এই উদ্ধৃতিটা উৎকীর্ণ থাকতো প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে একটা স্পৃহা বা Entrepreneurship spirit তৈরি করার জন্য। যুগে যুগে এডভেঞ্চারের নেশায় বুঁদ হয়ে সাধারণ মানুষের বোধ বিচার বা আরো চলতি ভাষায় ‘আক্কেল’ এর মাথা খেয়ে অভিযাত্রিক দল বা ব্যক্তি ছুটে গেছে কোনো না কোনো দুর্গম এলাকায়। কোনো কোনো সময় সেনানায়করা রাজ্য বা সীমানা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় অনেক সাহসী ভূমিকা নিতে গিয়ে নতুন কোনো স্থানের আবিষ্কার করেছেন।

দার্জিলিং বা ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের আবিষ্কার বা তার খ্যাতি বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বৃটিশ সেনা বা ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের আবিষ্কারক ডেভিড লিভিংস্টোনের কথা স্মরণযোগ্য। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনার কথা এখানে আগত সকল অতিথি বা নীতিনির্ধারকদের বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দেশের রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, লেখক-শিল্পী বুদ্ধিজীবীদের অনেকের কল্পনার বাইরে ছিলো পাহাড়, জল ও স্থানীয় জনজাতির বৈচিত্র্যময় জীবনের মিলনে সৃষ্ট এখানকার অপার সৌন্দর্যের কথা। যুগ যুগ ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো ‘এক্সক্লুডেড জোন’। দুর্গম পথ-ঘাটহীন এক জনপদ। স্বাধীন বাংলাদেশের পটভূমিতেই এই অঞ্চলের সাথে সারাদেশের মানুষের ব্যাপক যোগাযোগ ঘটে। আর সামরিক তৎপরতার কারণেই পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যে পা পড়ে অনেকের।

সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন বর্ণনায় এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিকটিকে স্পষ্ট করা হয়, যেন এর সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে পাহাড়ে সুফল আসে। পাহাড়ের পর্যটন এমনই এক দিগন্ত, যা সেনাবাহিনী বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে জানাতে চেয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে সুধীজনকে অবহিত করতে যেয়ে এর পর্যটনের দিকটাও তুলে ধরা হয়েছে। এক সময় মনে করা হতো কক্সবাজার ছাড়া আমাদের বুঝি আর কোনো পর্যটন স্পট নেই। বাংলাদেশেও যে দার্জিলিংয়ের মতো অনেক স্পট আছে তা সাজেকে বা নীলগিরিতে কোন স্পট না হলে কে জানতো। আগেই বলেছি, যখন পথ চলা কঠিন হয়, তখন কঠিন লোকেরাই এগিয়ে আসে, পথ দেখায়।

একটা সময় শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসের কারণে এখানে তো কেউ দিনের বেলায়ই পথ চলতে পারতো না, অপহরণ ও মুক্তিপণ আতঙ্কে। সেনাবাহিনী সকলের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ও উদাহরণ সৃষ্টির জন্য এখানে কিছু ‘সিগনেচার প্রজেক্ট যেমন নীলগিরি, সাজেক চালু করে। ইন্টারনেটে নীলগিরির ছবি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর এবং সর্বাধিক দেখা স্পটগুলির মধ্যে অন্যতম। অথচ এক সময় মানুষ ভাবতেই পারেনি বাংলাদেশে এরকম কোনো স্পট থাকতে পারে। সেনাবাহিনী তার লজিস্টিক শক্তিতে নিশ্চিত নিরাপত্তা বিধান করার কারণে নীলগিরি বা সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে সারাদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরা সহজ হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আজ হুমকি দিচ্ছে এই সম্ভাবনার দ্বার বন্ধ করে দিতে।

সেনাবাহিনীর দেখানো পথ ধরে বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তি পর্যায়ের উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয়েছে। পর্যটনের বিকাশে চুক্তি পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর স্থাপিত পর্যটন কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে পুলিশ, বিজিবি, ফরেস্ট, এলজিআরডি, জেলা পরিষদসহ নানান পর্যায়ে পর্যটন বিকশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এডভেঞ্চার, ট্রেকিং নামে প্রচুর ব্যক্তি পর্যায়ে গ্রুপ তৈরি হয়ে দেশের তরুণদের নিজ দেশের পার্বত্য ভূমিকে ও চিনতে জানতে সাহায্য করছে। পাহাড়ের বুক চিড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়কের হাতছানিতে আজ শত শত ইউটিউবার পাহাড়ে আসছে। এক সময় মানুষ দেশের সর্বোচ্চ পাহাড় চূড়া কেওক্রাডংয়ের নাম শুধু বইয়ের পাতায় দেখেছে, আজ দেশের হাজার হাজার তরুণ তরুণীরাও দুর্গমতার চ্যালেঞ্জকে ছুঁয়ে দিচ্ছে সেখানে পৌঁছে। এখানের বম জনগোষ্ঠী তাদের স্বাভাবিক রক্ষণশীলতাকে ঠেলে দিয়ে নিজেদের ঘরগুলোকে পেয়িং গেস্টের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

তবে পর্যটনের সব কিছুই ভালোভাবে চলছে বা চলবে তা কিন্তু নয়। পর্যটনের কিছু দায় আছে স্থানীয় মানুষ, প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি। কিন্তু সেটা সবক্ষেত্রে রক্ষা হচ্ছে না। বছর দুই আগে সাজেক গিয়ে আমার মোটেই ভালো লাগেনি। সাজেকের ছোট্ট টিলাকে আমার গুলিস্তান মনে হয়েছে। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত এবং অপরিকল্পিত যাত্রী ছাউনির মতো গা লাগা লাগা সব কটেজ। কোথায় সেই পাহাড়ের নিরবতা, নির্জনতা, ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক? প্রতিটি কটেজের নিচে অপচনযোগ্য সব আবর্জনার স্তূপ। তবে আমার কাছে সব থেকে শঙ্কাজনক মনে হয়েছে যে বিষয়গুলো তা হলো:

১. সাজেকের মিজোরামের নিকটবর্তী অবস্থান।
২. স্থানীয় লুসাই বা জনজাতির কম অংশীদারিত্ব।
৩. নিকটবর্তী পাড়াগুলোর জনজীবনে পর্যটনজনিত ডিস্টারবেন্স বা প্রাইভেসি লসের বিপরীতে কম সুবিধা পাওয়া।
৪. স্থানীয়দের দেখা গেছে সড়ক সন্নিহিত বাড়িতে ছোট ছোট দোকানে চিপস বা পানি বিক্রি করতে। বম বা কুকি জাতির মালিকানাধীন রিসোর্ট কম।
৫. সাজেকের পর্যটকদের জন্য পানি সংগ্রহের কারণে স্থানীয়দের পানি সংকট।

এদেশে যা হয় কেউ একটা ব্যবসা শুরু করলে, আশেপাশের রাম-সাম-যদু-মধু সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে তাতে। সে ব্যবসা বুঝুক বা না বুঝুক। সাজেক এবং নীলগিরির পথে এখন প্রচুর ব্যক্তিমালিকাধীন (অনেক পাহাড়িও আছে) রিসোর্টের দেখা মেলে। পাহাড়ের বিবদমান গ্রুপগুলো সরকার বা সেনাবাহিনীকে ঘায়েল বা তার আত্মমর্যাদায় ঘা দেওয়ার জন্য যত্রতত্র গড়ে উঠা এসব রিসোর্ট বা পর্যটনকেন্দ্রকে আঘাত করার প্রকাশ্য বিরোধিতা বা হুমকি দিয়ে আসছে। সেনাবিদ্বেষকে উস্কে দেওয়ার জন্য তারা তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য অপপ্রচারের দুটো শক্ত ইস্যু তৈরি করছে:
১. পর্যটন মানেই সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পাহাড়ি ভূমিদখল ও বাঙালিদের অনুপ্রবেশকে সহায়তা দেওয়া।
২. সীমান্ত সড়কের মূল লক্ষ্য পর্যটনকে প্রসারিত করা এবং তাদের পড়শী রাজ্যে অবাধ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। তাই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আর কিছুতে না পেরে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গের মতো সব পর্যটন সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দিতে হবে।

ভাবনাটি এরকম, পর্যটন ‘সেনাবাহিনীর বেবী’। এটাকে আঘাত করলে সেনাবাহিনী বেদনায় মূষড়ে পড়বে। পর্যটন যেভাবে গড়ে উঠেছে তা স্থানীয় জনগণের মাঝে বিশেষ করে তরুণদের মনে ‘আমার ভূমিতে বহিরাগতদের প্রবেশ’ বা ‘নিজে কোনো বিনিয়োগ বা ব্যবসা না করতে পারার হতাশা’ এভাবেই দেখছে। হিংসাটা আরো প্রবল হয় যখন এসবে কোন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বা সামরিক কর্মকর্তা থাকে। তার যত বৈধতার কাগজপত্রই থাকুক না কেন, কোনো অবসরপ্রাপ্ত সামরিক সদস্যের পাহাড়ে কোনোরূপ বাণিজ্যিক কার্যক্রম তরুণদের মনকে হিংসার তেলে ভেজে দিচ্ছে ।

আসল কথা হচ্ছে পাহাড়ি তরুণদের মনে Entrepreneurship Attitude খুব বেশি গড়ে উঠেনি। তাই তাদের অক্ষমতা হিংসায় রূপ নিচ্ছে। তাছাড়া সেনা নিয়ন্ত্রিত পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুব দৃষ্টি নন্দন এবং ভালো চলছে বলে একটা ঈর্ষাবোধ কাজ করছে। এই ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার দ্বারা স্থানীয় তরুণদের সম্পৃক্ত করা গেলে পর্যটন নিয়ে স্থানীয়দের মনে থাকা ঈর্ষা বা দ্বিধা থাকবে বলে মনে হয় না।

বর্তমানে পাহাড়িদের মধ্যে শিক্ষার হার অত্যন্ত বেশি, যা নিজেদের মধ্যে চাকুরির ক্ষেত্রে আন্তঃসম্প্রদায় প্রতিযোগিতাকে তীব্রতর করেছে। পাহাড়ি তরুণরা প্রথাগতভাবে সরকারি চাকরিকে সবার উপরে স্থান দেয়। চাকরির মতো ঝামেলাবিহীন পেশা (স্কুলে মাস্টারি, জেলা অফিসে বা সরকারি দফতরের চাকরি) এখন সোনার হরিণ। অন্যদিকে ব্যবসা এবং তা যদি পর্যটনের মতো খুব সংবেদনশীল হয় তবে তার জন্য দরকার অভিজ্ঞতা প্রশিক্ষণ ও ধৈর্য। পাহাড়িদের মধ্যে প্রাথমিক পুঁজির অভাব থাকায় এবং মার্কেটিং দক্ষতার অভাব থাকায় পর্যটনে ব্যাপকভাবে নিয়োজিত হতে পারছে না। যারাও শুরু করেছে তারা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দক্ষ না হওয়ায় বহিরাগত পর্যটকদের মধ্যে ঠিকমতো আস্থা তৈরি করতে পারছে না। এক্ষেত্রে যৌথ অংশীদারিত্ব একটা আদর্শ মডেল হতে পারতো, যেখানে বড় কর্পোরেট ক্লায়েন্ট ও স্থানীয় পাহাড়ি একত্রে কাজ করতে পারে।
গত মার্চে কাপ্তাই-রাঙামাটি লেক বরাবর একটি পাহাড়ি মালিকাধীন রিসোর্টে গিয়েছিলাম। লোকেশনের দুর্বলতা এবং প্রচারহীনতা, কিছুটা ভয়, এসব কারণে ভরা মৌসুমেও লোক টানতে পারছিলো না।

পর্যটন ব্যবসাটা খুবই ব্র্যান্ড নির্ভর। তাই আশেপাশে সেনাবাহিনী বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের রিসোর্ট থাকলে, ব্যক্তিপর্যায়ের রিসোর্টগুলি প্রতিযোগিতায় টিকে না। কারণ নিরাপত্তার কথা ভেবে রাতে ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো রিসোর্টে কেউ থাকতে চায় না।

সীমান্ত সড়ক নির্মাণে সরকার কর্তৃক প্রচারিত উদ্দেশ্যকে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো নেগেটিভ প্রচারণা দিচ্ছে। সীমান্ত সড়কের মাধ্যমে ব্যাপক বাঙালিয়ানা বা মিলিটারি মুভমেন্ট হবে বলে বেশি বেশি করে প্রচার করে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ হবে নতুন সৃষ্ট পর্যটন স্পটে স্থানীয় তরুণ বা উদ্যোক্তাদের বেশি করে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে সুযোগ করে দেওয়া। কোনো জায়গায় পর্যটন স্থানীয় জনগণের আন্তরিক সংযুক্তি ছাড়া বিকশিত হয় না। স্থানীয় জনগণ অতিথি বৎসল না হলে, টাকা খরচ করে কেউ পাহাড়ে টেনশন কিনবে না। পর্যটক যদি নিরাপত্তাহীন হয় তবে তা স্বর্গোদ্যান হলেও কেউ শেখানে যাবে না। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম অনিরাপদ হলে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের মেঘালয়, সিকিম, নেপাল বা ভুটানে যাবে।

যেমনটা বলছিলাম, সেনাবাহিনী পাহাড়ের চূড়ায় রিসোর্ট বানিয়ে ‘বাণিজ্য’ করছে এমন প্রচারের অপব্যাখ্যা দূর করার জন্য বা ‘নিরাপওা বিধানই’ মূল লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন এবং তা সম্প্রসারিত করার জন্য মূল কর্মবিধিতে মনোসংযোগ করা দরকার।

যে নীলগিরি বা সাজেক যেতে ৩/৪ দিন হাঁটতে হতো, তা এখন ১/২ ঘণ্টার পথ, এই কঠিন পথের কারিগর বা Path Finder সেনাবাহিনী, তা পাহাড়িরা যাতে উপলব্ধি করতে পারে সে ব্যাপারে তাদের আগ্রহও থাকতে হবে। শত শত বছর ধরে তাদের পূর্ব পুরুষরা পিঠ বাঁকা করে মাথা নিচু করে ঘাম ঝরাতে ঝরাতে এ পথে হেঁটেছে, এই ভাবনাটা তাদের জন্য মুখ্য হোক।

একটা ঐতিহাসিক শিক্ষা আমাদের নিতে হবে: ১৯৭৮ সালের মতো যত্রতত্র অপরিকল্পিত বাঙালি পুনর্বাসনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর আক্রমণত্মক ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। পুনর্বাসন প্রকল্পে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে সেনাবাহিনী অসংখ্য ক্যাম্প করে তার আক্রমণাত্মক শক্তিকে সংকুচিত করে ফেলেছিলো। এবারেও কেএনএফ বা জুম্ম লিবারেশন আর্মির পর্যটন কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে পরিচালিত কোনো আক্রমণ ঠেকাতে রক্ষণাত্মক কাজে (গার্ড ডিউটি) যেন প্রাইম ফোর্স ব্যবহার না করা হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ১৯৮৬ সালের মতো ব্যাপক বাঙালি গণহত্যার মতো ব্যাপক পর্যটন কেন্দ্রিক আক্রমণকে মাথায় রাখতে হবে। পর্যটক যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবে, আর অপহরণের শিকার হয়ে সেনাবাহিনীর শরণাপন্ন হবে তা কাম্য নয়।

পর্যটন সেনাবাহিনীর বিশাল কোনো অর্থনৈতিক খাত নয়, যার মাধ্যমে টাকা আয় না করলে সেনাবাহিনীর বেতন বন্ধ হয়ে যাবে, এই ভাবনাটাও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। পাহাড় বা দেশের মানচিত্রের অখণ্ডতাই হোক আমাদের মূলমন্ত্র। সীমান্ত সড়ক হলে পর্যটন বাড়বে এই বয়ান আমাদের মুখ দিয়ে না বের হোক। সীমান্ত সড়ক চোরাচালান, অবৈধ চলাচলের প্রতিবন্ধক হোক আমাদের ঘোষিত এবং উচ্চারিত লক্ষ্য। প্রয়োজনে সাজেক হবে গোলান হাইটের মতো কোন ট্যাকটিক্যাল অবজারভেশন পোস্ট।

লেখক: পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সামরিক বিশ্লেষক

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আগুন, পর্যটন, পাহাড়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন