৮১টি বরাদ্দ থেকে কঠিন নীতিমালার কারণে ৬৬ ঘর ফেরত

fec-image

প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বা ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নের গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণে বান্দরবানের থানচি উপজেলার ৪ ইউনিয়নের জন্য মোট ৮১টি বরাদ্দ থেকে কঠিন নীতিমালার কারণে ৬৬টি ঘর ফেরত দেয়া হয়েছে। বাকি ১৫টি থেকে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় ৬ পরিবারের ঘর তৈরি চলমান। বাকি ৯ পরিবারকে তদন্ত করা হচ্ছে কাকে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায় , ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে থানচি উপজেলা ৪টি ইউনিয়নের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বা ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় ঘর তৈরি প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ৭৬টি পরিবার এ সুযোগ পাবে।

প্রতিটি ঘরের জন্য নির্মানের সরকারি হিসেব অনুসারে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার করে এক কোটি ৯৬ লক্ষ ৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০১৯-২০ সালে  মোট ৮১টিতে ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৮ টাকা বরাদ্দ মেলে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র বা নীতিমালা ছিল নিজস্ব বন্দোবস্তীকৃত খাজনা আদায় যোগ্য জমি, গৃহহীন, হত দরিদ্র, সরকারিভাবে অন্য কোন সহয়তা নেই তাদের যাচাই বাছাই করে তালিকা করতে গিয়ে থানচি উপজেলা হত দরিদ্র, গৃহহীণ, সরকারীভাবে অন্য কোন সহায়তা নেই এমন ব্যক্তি বা পরিবার অনেক। তবে নিজস্ব বন্দোবস্তী জমি আছে এমন পরিবার পাওয়ার কঠিন হয়ে পড়ে। নিজস্ব বন্দোবস্তীকৃত জমি না থাকায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিরুপায় হয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে ফেরত দিতে হয়েছে ৬৬টি পরিবার।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসানের হাতে ১৫টি রাখলেও বর্তমানে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ৬টি ঘর নির্মান চলমান রয়েছে। ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে থানচি উপজেলা ব্রিকফিল্ড না থাকায় বান্দরবান জেলা থেকে ক্রয় করে পরিবহন খরচ বেশি হওয়া ২৬ হাজার টাকা অতিরিক্ত হিসেবে গুনতে হয়েছে।

থানচি সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও ৩৬০ নং কোয়াইক্ষ্যং মৌজা হেডম্যান মাংসার ম্রো বলেন, পার্বত্য বিরাজমান সমস্যা সমাধান ১৯৯৭ সালের শান্তির চুক্তি স্বাক্ষরের পর পার্বত্য অঞ্চলের জমি নতুন করে বন্দোবস্তি/ রেজিস্ট্রেশান প্রক্রিয়া স্থগিত হওয়ার কারণে থানচির মানুষের অধিকাংশ বলতে ৯৯ জন মানুষের হাতে জমির বন্দোবস্তী রেজিস্ট্রেশন কাগজ পত্র নেই।

তবে থানচি উপজেলা ১১টি মৌজায় ২১৭টি পাহাড়ি পাড়ায় পাড়ার প্রধান (কারবরাী) ও মৌজা প্রধান হেডম্যানদের সমন্বয়ের প্রজাগণ ৫ একর করে বিভিন্ন শ্রেণির বিভক্ত জমি মালিকানার জন্য আবেদন করা হলে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে হেডম্যানদের রিপোর্ট এর উপর নির্ভর করে জমির দখল প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটি যদি প্রধানমন্ত্রীর পার্বত্য অঞ্চলের জন্য একটি পৃথক নিতিমালা করা হলে গৃহহীণ, হত দরিদ্র পরিবার গুলি অবশ্যই এসডিজি -১০ এর আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করা যাবে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একজন আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে তিনি প্রধান মন্ত্রীও পার্বত্যমন্ত্রী নিকট আবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার ভিক্তিক গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় প্রকল্পের আওতায় উপজেলা প্রশাসনে তালিকা মনোনীত হয়েছে তারা হলেন, ৪নং বলিপাড়া ইউনিয়নের বাগান পাড়া নিবাসী পকশি মারমা, ও মংশৈওয়াং মারমা, হিন্দু পাড়া নিবাসী আহম্মদ শফি, বলিপাড়া নিবাসী শৈসিং মারমা, থানচি সদর ইউনিয়নের আমতলী পাড়া নিবাসী আমীর আলি, মুক্তাজন পাড়া কারবারী মুক্তাজন ত্রিপুরা, নির্মানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে অতি শ্রীঘ্রই নির্মিত হবে।

সরেজমিনে গৃহহীন  ও হত দরিদ্র বাগান পাড়ায় মরহুম মংবাউ মারমা এর ছেলে মংশৈওয়াং মারমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি এই ঘর নির্মাণ করে না দিতেন তাহলে আমার বাবা-মা এবং আমাদের চৌদ্দ পুরুষের স্বপ্ন থাকলেও ঘরের দেখা মিলত না। তিনি খুশিতে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘজীবন কামনা করেন।

যোগাযাগ করা হলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কঠোর নিতিমালা অনুসরন করা হলে পার্বত্য অঞ্চলের থানচি উপজেলা গৃহহীন, হত দরিদ্র, পরিবারের সংখ্যা অনেক। থানচি উপজেলা ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৮০% মানুষ পাবেন কিন্তু কঠোর নিতিমালা অনুসরন করে ২০১৮-১৯ সালে বরাদ্দ থেকে ৬৬টি তালিকা বাদ দিয়ে ফেরত দিতে হয়েছে। এ সর্ম্পকে নিতিমালার কারণে সম্ভব হচ্ছে না বিষয়ের মাননীয় পার্বত্য মন্ত্রীর, জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: থানচি, দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের, দুর্যোগ সহনীয়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন