কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টা : ব্যর্থ হয়ে বসতবাড়ীতে তাণ্ডব
অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় এক অসহায় কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে কতিপয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা ৷ এতে ব্যর্থ হয়ে তারা কিশোরীর বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে রক্ষিত মামলাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এসময় সন্ত্রাসীরা বসতবাড়ীর আঙ্গিনার গাছ-গাছালি কেটে সাবাড় করারও অভিযোগ উঠেছে। বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনাটি ঘটে।
সরেজমিন ঘটনাস্থল ঘুরে বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, উখিয়া উপজেলার ক্রাইম জোন নামে খ্যাত পালংখালী ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহ আলমের কিশোরী মেয়ে সাজেদা বেগম (১৬)কে অপহরণের উদ্দেশ্যে বাড়ীতে দা, কিরিচ, অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় একই এলাকার আব্দুল মোনাফের ছেলে আব্দুল খালেক (৩৪) ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এসময় বাধা দিলে কিশোরীর মা আয়েশা বেগম (৪০)কে কূপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা।
কিশোরীর পিতা শাহ আলম অভিযোগ করে বলেন, পরিবারের অভাব-অনটনের কারণে নিজে পড়ালেখা করতে পারিনি। তবে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবো এমন স্বপ্ন নিয়ে পড়ালেখা করিয়ে আসছিলাম, কিন্তু এই সন্ত্রাসী খালেক আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করার কারণে ৮ম শ্রেণি থেকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিই। এরপর থেকে বারবার বাড়িতে এসে হুমকি-ধমকি দিত। তারা প্রভাবশালী বিধায় আমরা ভয়ে আতঙ্কে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। বুধবার রাতে খালেকসহ ১০/১২জন সন্ত্রাসী বাড়ীতে এসে মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করলে, পাশ্ববর্তী লোকজন এসে মেয়েকে রক্ষা করেন৷ তখন তাকে ধরে নিয়ে যেতে না পেরে আমার স্ত্রী আয়েশা বেগমকে কুপিয়ে আহত করে৷ পাশাপাশি বাড়ির ভিতরে রক্ষিত বিভিন্ন মালামাল তচনচ করে খালেকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা৷ শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসীরা বাড়ির আঙ্গিনার কলা গাছ, আম গাছসহ বিভিন্ন গাছগাছালি কেটে সাবাড় করে দেয়। তিনি বলেন, ওই সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না।
কিশোর মা আয়েশা বেগম বলেন, আমার স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগে খালেক নামের একজন বখাটে সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে ১০/১২ একটি গ্রুপ অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করে। আমি মেয়েকে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে রেখে তাদের সাথে তর্কাতর্কি করলে তারা আমাকে ধারালো কিরিচ দিয়ে আঘাত করে, এসময় আমার ডান হাতের কব্জি কেটে যায়। তখন আমি চিৎকার করলে লোকজন এগিয়ে আসে, পরে সন্ত্রাসীরা চলে যায়।
কিশোরী সাজেদা বেগম জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বিভিন্ন অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে উত্তক্ত করে আসছিল খালেক নামের ছেলেটি। আমি তার এসব প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় আমাকে অপহরণ করার জন্য বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে। এলাকার লোকজন আমাকে রক্ষা করেছে। আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
কিশোরী আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে বাপের বাড়িতে থাকতে পারছিনা। আমি এখন সরকারের নিকট জীবনের নিরাপত্তা দাবি করছি।
অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনায় আমি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি থানা পুলিশ।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, অভিযোগ আমার হাতে আসেনি, হয়তো থানায় অন্য কারো কাছে দিয়েছে। বিষয়টি আমি দেখছি।