নানিয়ারচরে মোবাইল টাওয়ারে উঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিনজন আহত

রাঙামাটির নানিয়ারচরে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মোবাইল টাওয়ারে উঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন বন্ধু আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় মোবাইল টাওয়ারের পাশে থাকা ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে তারা আহত হয়।

আহতরা হলেন, বুড়িঘাট ইউনয়নের ২নং ওয়ার্ড ইসলামপুর এলাকার আবু সালেহের ছেলে মো. পলাশ (১৬), জয়নাল বিশ্বাসের ছেলে নুর আলম (১৭) ও একই এলাকার সোবাহান হাওলাদারের ছেলে মো. ফোরকান (১৮)।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত পলাশ ও নুর আলমকে প্রথমে রাঙামাটি সদর হাসপাতাল পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। এছাড়াও ফোরকানকে নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, ফোন সংযোগ সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান রবি টাওয়ারে সংযোগ স্থাপনে কাজ করার সময় ওই তিন কিশোর কৌতুহলবশত টাওয়ার এর কাজ দেখতে উপরে উঠে পড়ে। এসময় টাওয়ারে কর্মরত ব্যক্তিরা টাওয়ারে উঠতে বাধা দেন তাদের। তারা বাধা উপেক্ষা করে টাওয়ারের উপরে উঠে। পরে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে টাওয়ারের ভবন সংলগ্ন ৩৩ হাজার কিলো ভোল্টের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়েন ওই তিন কিশোর।

এ বিষয়ে টাওয়ারে কর্মরত মোমিন হোসেন বলেন, সকালে আমরা রবি টাওয়ার সংযোগে কাজ করতে আসি। সকাল থেকে আমরা ঠিকমত কাজ করছিলাম। দুপুরে ৩ কিশোর টাওয়ারের গেইট খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এসময় আমরা মানা করি। কিন্তু তারা আমাদের বাধা না মেনেই ভবনের ছাদের উপরে উঠে পড়ে। তারা টাওয়ারের মূল অংশে ওঠার চেষ্টা করলে আমি তাদের উপর ক্ষিপ্ত হই। এতে তারা আর উপরে না উঠে নিচে ছাদে দাঁড়ায়। আমি তাদেরকে ভবন থেকে নেমে যেতে বলি। এসময় তারা ভবনের উপর থেকে নিচে কাউকে লক্ষ করে কাগজ ছুড়ে মারে। তখন একটি বিকট আওয়াজ শুনে নিচে তাকিয়ে দেখি পাশের বৈদ্যুতিক খুটি থেকে শর্ট সার্কিট লেগেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর এই এলাকায় বিদ্যুতের নতুন ৩৩ হাজার কিলোভোল্ট এর কাজ শুরু হলে স্থানীয়রা এই পিলার টি এখানে স্থাপনে বাধা দেন। কিন্তু এলাকাবাসীর কোন বাধা আমলে না নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মে শেষ করে প্রকল্পের কাজ। এতে ঝুঁকিপূর্ণ এই পিলারটি স্থাপন হয়।

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কালাম মল্লিক জানান, অনেক বার মানা করা সত্ত্বেও এই স্থানে বৈদ্যুতিক খুটি স্থাপন করে তারা। আজ টাওয়ারের ভবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে খুটিটি স্থাপন হলে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটত না। আজ হয়তো এই এলাকার ৩ জন কিশোর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। আগামীতে টাওয়ারে কাজ করা ব্যক্তিরা যে দুর্ঘটনার শিকার হবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে? শীঘ্রই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে এমন সব সংযোগ খুটি নিরাপদ স্থানে স্থাপনের দাবি জানান তিনি।

টাওয়ারের ভবন ঘেঁষে বৈদ্যুতিক খুটি স্থাপনের ব্যাপারে ওই প্রকল্পের ঠিকাদার নুর মোহাম্মদ কাজল বলেন, ইঞ্জিনিয়ার আমাদের যেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন আমরা সেই ভাবেই কাজ বুঝিয়ে দিয়েছি। এব্যাপারে আপনারা ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলতে পারেন।