ঈদগাঁওতে বেড়িবাঁধ কেটে পুল নির্মাণ, প্লাবন ঝুঁকিতে গ্রামবাসী ও চিংড়ি ঘের

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ কেটে নির্মাণ করা হয় অবৈধ পুল। যার কারণে সাগরের জোয়ারের পানি প্রবেশের চরম ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী নিম্নাঞ্চলের জনবসতি ও চিংড়ি ঘের। এ শংকায় আতঙ্কিত এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এক প্রভাবশালীর নেতৃত্বে বেড়িবাঁধের ভেতর ও বাহিরের দু’টি চিংড়ি ঘেরের সংযোগ সাধন ও ঘেরে সাগরের পানি প্রবেশ করানোর জন্য সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে ঝুঁকিপূর্ন এ পুল বসানো হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, কিছুদিন আগে পোকখালী ইউনিয়নের পশ্চিম গোমাতলী গ্রামে মহেশখালী চ্যানেলের বেড়িবাঁধ কেটে এই আরসিসি পুল বসিয়েছেন সাবেক মেম্বার মৌলভী আবদুল্লাহ’র নেতৃত্বাধীন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ৬৬/৩ নং পোল্ডারের ইআইপি -২ সুইস গেইট সংলগ্ন উক্ত স্থানের সরকারী বেড়িবাঁধ কেটে ফেলায় পার্শ্ববর্তী ৪/৫ টি গ্রামের শতাধিক পরিবারের বসতি গুলোর মধ্যে প্লাবন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ দেশ ও জনবিরোধী ঘটনার আতঙ্কিত এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেন। যার ফলে উক্ত পুল চালু করতে না পেরে পুলের মুখ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রভাবশালীরা। কিন্তু গতকাল থেকে ফের দৈনিক ২০/৩০ জন শ্রমিক দিয়ে পুলের দুই পাশের মাটি কেটে নিতে শুরু করে। এতে বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

গতকাল বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত পয়েন্টে প্রায় ১০ গজ প্রস্থের মূল বেড়িবাঁধ কেটে নির্মিত পুল দিয়ে চিংড়ি ঘেরে সাগরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করানো হচ্ছে । এতে পাশের গ্রামগুলো তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

৬৬/৩ পোল্ডারের আওতাধীন পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন দলের সদস্যরা বলেন, সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে পানির তোড়ে কাটা বেড়িবাঁধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পুল ভেঙ্গে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আশপাশের সব গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। গত পূর্নিমার জোয়ার চলাকলীন সময়েও ঝুঁকিপূর্ণ উক্ত পয়েন্টে বেড়িবাঁধ উপচে গ্রামে পানি ঢুকেছে। ভাঙ্গন বড় হয়ে গেলে এতদঞ্চলের সব চিংড়ি ঘের ও ৮/১০ টি গ্রাম সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলেও জানান তাঁরা।

এলাকাবাসী জানান, এর আগে ২০১৭ সালে উক্ত পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রায় দুই বছর জোয়ারের পানিতে ভেসেছে গোটা এলাকা।

স্থানীয়রা আরও জানান, উক্ত বেড়িবাঁধ তাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম । বেড়িবাঁধ কেটে দেয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের বাহির এলাকার সাথে যোগাযোগ এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবদুল্লাহ মৌলভী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়ে পুল বসানো হয়েছে। মৌসূম শেষে তা আবার বন্ধ করে দেয়া হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার’র নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ বলেন, সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে অবৈধ পুল বসানোর বিষয়টি অবগত হয়েছি। পরিদর্শনের পর দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় সময় এলাকার গুটিকয়েক প্রভাবশালী তাদের স্বার্থ চরিতার্থে উপকূলবাসীর জীবনকে হুমকিতে ফেলে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে ম্যানেজ করে এসব দেশ ও জনবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ঈদগাঁও, চিংড়ি, ঝুঁকি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন