খাগড়াছড়িতে নতুন ঘর পেলো ৫৮৩টি পরিবার

fec-image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সারাদেশে ২২ হাজার ১০১টি পরিবারের ৪র্থ পযার্য়ের (২য় ধাপ) ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে গৃহ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। এরমধ্যে খাগড়াছড়ি জেলার ৯ উপজেলায় ৫৮৩টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে নতুন গৃহ ও ভূমি প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে লক্ষীছড়ি উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ গৃহ ও ভূমি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

এ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় আজ সারাদেশে ২২ হাজার ১০১টি অসহায় পরিবারকে নতুন গৃহ ও ভূমি হস্তান্তর করা হচ্ছে।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফেরদৌসী বেগম, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ক্রইসাঞো চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিক শাহিনা আক্তার, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা বাঁশরি মারমা, মহিলা নেত্রী ফারহানা আজম, সাংগঠনিক সম্পাদিকা অন্তরা খীসাসহ জেলা সদরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৯টি উপজেলার জন্য ৭ হাজার ২৮ অসহায় পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত জমিসহ ৬হাজার ৪৪৫ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ এ জেলা ৫৮৩টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।

দীঘিনালায় পাকা ঘরসহ দলীল পেল ১৫০ পরিবার
সারাদেশের ন্যায় দীঘিনালায়ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। দীঘিনালা উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরাফাতুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ কাশেম।

সহকারী কমিশনার ভূমি, আবুল হাসনাত খাঁনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা দেওয়ান, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রাজু, দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম জানান, আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে ভার্চুয়ালি উদ্ধোধনের পর দীঘিনালা উপজেলায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ১শত ৫০ জন অসহায়, গরিব, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তাদের মাঝে প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এর আগে দীঘিনালায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৯৭টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ম ও ২য়, ৩য় ও চতুর্থ পর্যায়ে (১ম ধাপে) ৯৪৭টি গৃহ প্রদান করা হয়।

এব্যাপারে দীঘিনালা উপজেলার মুসলিম পাড়া গ্রামের আজমতি বেগম(৬০) জানান, আমরা মা মেয়ে দুজনই বিধবা। আবার দুজন নাতি রয়েছে। ভাঙ্গা ঘরে থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।

রামগড়ে ৬৫ ভূমিহীন পরিবার পেলেন আশ্রয়ণের ঘর
খাগড়াছড়ির রামগড়ে এবার ৬৫টি দুস্থ ও ভূমিহীন পরিবার পেলেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। উপজেলা অডিটরিয়ামে এ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মানস চন্দ্র দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন হাছিনা আক্তার, রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহা আলম মজুমদার, পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর রাসগড়ের ৬৫টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের হাতে ঘরের চাবি ও ভূমির দলিল হস্তান্তর করা হয়।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) মানস চন্দ্র দাশ জানান, ৪র্থ পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপে এ ৬৫টি ঘরের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রামগড় পৌরসভার হকটিলা নামক এলাকায় ৩৭টি, রামগড় ইউনিয়নে ২৩টি ও পাতাছড়া ইউনিয়নে ৫টি রয়েছে।

তিনি আরও জানান, রামগড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে ১ম ধাপে মোট ৪৭৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন দুস্থ পরিবারকে দ্বি কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাকা ঘর ও দুই শতক ভূমির দলিল দেয়া হয়। এরমধ্যে রামগড় পৌরসভায় ৫৩, রামগড় ইউনিয়নে ২১৪ পরিবার ও পাতাছড়া ইউনিয়নে ২০৯টি পরিবার রয়েছে।

মুজিববর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গৃহহীন অসহায় পরিবারদের মাথাগোঁজার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর ও ভূমি দেয়া হচ্ছে।

পানছড়িতে নতুন ঠিকানায় ঠাঁই নিয়েছে ৭৫টি পরিবার
পানছড়ি উপজেলার নতুন করে আরো ৭৫টি পরিবার ঠাঁই নিয়েছে তাদের নতুন ঠিকানায়। এ নিয়ে উপজেলায় সর্বমোট ৭২৩টি পরিবার পেয়েছে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর।

এ উপলক্ষে বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকেই সুবিধাভোগীদের পদচারণায় মুখরিত হয় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন এলাকা। সকাল ১০টায় প্রধানমস্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মাঝে জমির কাগজসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। পানছড়ি উপজেলা প্রশাসন এ উপলক্ষে সাজিয়েছিল নানান আয়োজন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া আফরোজ। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চন্দ্র দেব চাকমা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহমেদ হাছান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মনিতা ত্রিপুরা প্রমুখ। অতিথিরা সুবিধাভোগীদের হাতে জমির কাগজসহ ঘরের চাবি ও গাছের চারা তুলে দেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: খাগড়াছড়ি, নতুন ঘর
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন