খাগড়াছড়িতে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের অবিসংবাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার (এম এন লারমা) ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
দিনটি উপলক্ষে আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে জেলার মহালছড়ির খুলারাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
জেলা সভাপতি আরাধ্য পাল খীসা’র সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা।
এছাড়াও স্মরণ সভায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অংশুমান চাকমা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সস্পাদক জুপিটার চাকমাসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, পাহাড়ের জুম্ম জাতির অধিকার আদায়ে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা আমৃত্যু আন্দোলন করে গিয়েছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে ঘাতকরা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমাকে হত্যা করলেও তার আদর্শকে ম্লান করতে পারেনি। জুম্ম জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান বক্তারা।
এর আগে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার অস্থায়ী বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলীয় নেতা কর্মীরা।
উল্লেখ, ১৯৮৩ সালের এই দিনে খাগড়াছড়ি জেলার ভগবান টিলা এলাকায় আভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে আট সহযোদ্ধাসহ নিহত হন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমা)। সে থেকে প্রতি বছর দিনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা ওরফে মঞ্জু (এমএন লারমা)ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নির্বাচিত প্রথম সংসদ সদস্য। তিনি জাতীয় সংসদে বাংলাদেশের সংবিধানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবীতে জাতীয় সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন। এরপর থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ তাঁর নেতৃত্বে রাঙ্গামাটিতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।
পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের ৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ির ইটছড়িতে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’। এমএন লারমার মৃত্যুর পর তারই ছোট ভাই জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লামরা সংগঠনের দায়িত্ব নেন। সন্তু লারমার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর সরকারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন ‘শান্তি বাহিনী’ ।