গুইমারা দাখিল মাদ্রসায় কর্মচারী নিয়োগে কারসাজির অভিযোগ
খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার গুইমারা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রসার কর্মচারী নিয়োগ ও শ্রেণিকক্ষ দখল করে সপরিবারে বসবাসসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত ২৩ মে ২০২২ দৈনিক সবুজ পাতার দেশ পত্রিকায় ২টি পদ যথাক্রমে গবেষণাগার/ল্যাবসহকারী, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, ল্যাব সহকারী পদের জন্য আবেদনকারীকে মাদ্রাসার সুপার জয়নাল আবেদীন বরাবরে ১ হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফ প্রদান করতে হবে। পরবর্তীতে জুলাই ২০২২ পূর্ণনিয়োগ নামে আবারো বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়। ২০২২ সালের জুলাই পেরিয়ে এখন ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস চলে আসলেও ল্যাবসহকারী পদের নিয়োগ পরীক্ষার কোন খবর নেই।
আবেদনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, “২৩ মে সবুজ পাতার দেশ পত্রিকার কাটিং এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি দেখে মাদ্রাসা সুপার বরাবরে ১ হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফ করে ব্যাংকের স্লিপ এবং আবেদনসহ জমা দিই। ২০২২ পেরিয়ে ২০২৩ হয়ে গেলেও আজও কোনো নিয়োগ পরীক্ষার হদিস নেই। কবে নিয়োগ পরীক্ষা হবে তারও জানান নি মাদ্রসার সুপার।” এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
গুইমারা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রসার সুপার জয়নাল আবেদীনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “৩টি নিয়োগের জন্যই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং ৩টির জন্যই ব্যাংক ড্রাফ নেওয়া হয়েছে। তবে ল্যাব সহকারী পদটি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে পরবর্তীতে অনুমতি পেলে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে। বাকি ২টি পদের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে আয়া পদে ৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এবং নিরাপত্তাকর্মী পদে ৩ জন অংশ নেয়। এছাড়া ল্যাব সহকারী পদের জন্য ৫ জন আবেদন করেছে যার মধ্যে নামে ও কাগজ পত্রে ত্রুটি থাকার কারণে ২ জনকে বাতিল করা হয়েছে।
জাতিয় দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধিরা মাদ্রসার সুপার জয়নাল আবেদীনের নিকট নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদের নিয়োগে বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর উক্ত দুটি পদের জন্য পরিক্ষা নেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগ কখন দেওয়া হবে সেই বিষয়টি কমিটি সহ আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
এছাড়া র্দীঘদিন যাবৎ পরিবার নিয়ে মাদ্রাসার শ্রেনীকক্ষ দখল করে বসবাস করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, মাদ্রাসাটির ৩য় তলায় চারপাশে পর্দা লাগিয়ে পরিবার নিয়ে র্দীঘ ১বছর যাবৎ বসবাস করছে। এই বিষয়ে মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটিও অবগত আছে বলেন জানান উক্ত মাদ্রাসাটির এক শিক্ষক।
মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত হলেও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিগুলো দিচ্ছে নিম্ম মানের স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায়। ভালো মানের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দেওয়ায় অনেকে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় জানেই না। আর এ সুযোগে নিজের পছন্দের লোকদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া এবং মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাথের সুযোগ করছে। এসকল অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত করে শ্রেণিকক্ষে বসবাস ত্যাগ এবং পুনর্নিয়োগের দাবি জানান তারা।
মাদ্রসার শ্রেণিকক্ষ দখল করে সপরিবারে বসবাসের বিষয়ে গুইমারা দাখিল মাদ্রসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহ আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাস নিয়মের বর্হিভূত। প্রায় ১০ মাস যাবত শ্রেণিকক্ষে সপরিবারের বসবাস করে আসছে বলে সত্যত্যা স্বীকার করেন।