জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের: কাউখালীতে চৌদ্দ হাজার গামারী গাছের চারা কেটে ফেলল দূষ্কৃতকারীরা

Kawkhali tree News-2 copy

আরিফুল হক মাহবুব, কাউখালী (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি:
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রাঙামাটির কাউখালীতে চৌদ্দ হাজার গামারী গাছের চারা কেটে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে দূস্কৃতকারীরা। ১৮ জানুয়ারী দুপুরে উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের বটতলীর আগা নামক স্থানে এঘটনা ঘটে। কাউখালী থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা শিকার করেছে। এব্যাপারে কাউখালী থানায় মামলা হয়েছে।

সরজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের বটতলীর আগা নামক স্থানে অন্তত এক হাজার হেক্টরের বেশী সরকারি পতিত খাস জমি স্থানীয় পাহাড়ী ও বাঙ্গালীরা তাদের দখলে রেখে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে ফলজ ও বনজ বাগান সৃজন করে আসছিল। গত দু’বছর পূর্বে বেতবুনিয়ার কাশখালী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় মো. জাকের হোসেন মাষ্টার, তার বন্ধু পূর্ব রাউজানের বাসিন্দা শেখ মহিউদ্দিন ও জায়গার মূল দখলদার পাইচাজাই মারমাসহ তিনজনে মিলে চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় চার একর জায়গার উপর চৌদ্দ হাজার গামারী গাছের চারা রোপন করে।

কিন্তু বেতবুনিয়ার প্রভাবশালী এক ব্যক্তিরে নির্দেশে কাউখালীর সীমান্তবর্তী রাউজানের মো. আবু হানিফ ও জসিমের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একটি গ্রুপ গত ১৮ জানুয়ারী দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি দেড় বছর বয়সী প্রায় চৌদ্দ হাজার গামারী গাছে চারা সম্পূর্ণ কেটে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।

ন্যায় বিচারের আশায় অসহায় স্কুল শিক্ষক জাকির হোসেন গত দু’দিন ধরে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন ফলাফল না পেয়ে অবশেষে মোঃ আবু হানিফ ও জসিমকে দায়ী করে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত জাকির হোসেন জানান, জবর দখল করার উদ্দেশ্যে ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এঘটনা ঘটিয়েছে দূষ্কৃতিকারীরা। জাকিরের অপর পার্টনার জিয়াউদ্দিন মামুন এঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবী করে বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এধরণের জবর দখলের মাধ্যমে যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য আমার প্রশাসনের নিকট দাবী জানাচ্ছি।

কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম চৌধুরী জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকতেই পারে, এসবের বিচারের জন্য আদালত রয়েছে। তাই বলে এতগুলো গাছ কেটে ফেলবে তা হয়না, এরা দেশ ও জাতির শত্রু । এসব দূস্কৃতিকারীদের কোন ক্রমেই ছাড় দেয়া উচিত নয়। তিনি জানান, সরজমিনে তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ নিলু কান্তি বড়ুয়া জানান, থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন