টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে স্পিডবোট ডুবে নিহত ১, উদ্ধার ২৩

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে স্পীডবোট ডুবে ফিরোজা বেগম (৫০) নামে এক মহিলা যাত্রী নিহত হয়েছেন । তিনি সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ডেইলপাড়ার আব্বাস আলীর স্ত্রী এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (১,২,৩) সাবেক সদস্য।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটের গভীর সমুদ্র গোলগড়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য ও স্পীডবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশে স্পীড বোটটি রওনা দেয়। এতে চালক ও সহকারী ছাড়াও ২২ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ১৭ জন পর্যটক ও ৫ জন স্থানীয় বাসিন্দা। গভীর সমুদ্র গোলগড়া নামক এলাকায় আসার পর ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে স্পীড বোটটির তলা ফেটে ভেতরে পানি ঢুকতে শুরু করে। একপর্যায়ে স্পীডবোটটি ডুবে যায়।

এ সময় কোস্টগার্ডের একটি টহলদল ও অপর একটি স্পীডবোট এসে যাত্রীদের উদ্ধার করে। তবে একজন যাত্রী নিহত হয়েছেন।

সেন্টমার্টিনদ্বীপ ২০ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাঈমুর রহমান বলেন, স্পীড বোট ডুবির ঘটনায় আহত ৩ জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে ফিরোজা বেগম নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে দমকা হওয়ার কবলে পড়ে স্পীডবোটটির তলা ফেটে যায়। দ্রুত কোস্টগার্ডের সহযোগিতা পাওয়ার কারণে যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে সাবেক এক নারী ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফ-সেন্ট মার্টিনে নৌরুটে চলাচলের যে স্পীডবোট রয়েছে, এর অধিকাংশই পুরোনো। সরকারের কোনো দপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই এসব স্পিডবোট চলাচল করে আসছে। প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। ধারণক্ষমতার তুলনায় বেশি যাত্রী পরিবহন করা হয় এসব স্পিডবোটে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘স্পীডবোট ডুবিতে এক নারীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ২৪ জন পর্যটক ও স্থানীয় যাত্রী নিয়ে একটি বড় স্পীডবোট টেকনাফের সার্ভিস ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের জেটিঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাসের কারণে সাগর উত্তাল থাকায় বোটটি শাহপরীর দ্বীপে অপেক্ষা করে পরবর্তীতে বোটটি পুনরায় যাত্রা শুরু করলে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে ৩ কিলোমিটার অদূরে গভীর সমুদ্র গোলগড়া নামক স্থানে পৌছালে তলদেশ ছিদ্র হয়ে বোটটি ডুবে যায়।

তথ্য পেয়ে তৎক্ষাণাৎ কোস্টগার্ড স্টেশন সেন্টমার্টিন থেকে একটি উদ্ধারকারী দল হাই স্পীড বোট যোগে উক্ত স্থানে উদ্ধার অভিযানে গমন করে এবং ঘটনাস্থল থেকে ২৪ জন যাত্রীকেই জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

উদ্ধার পরবর্তীতে সকলকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার প্রদান করা হয়। এসময় ১ জন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সেন্টমার্টিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ প্রেরণ করা হয়। সেন্টমার্টিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসারত অবস্থায় ফিরোজা বেগম (৫০) নামে এক নারী মৃত্যুবরণ করেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ধার, টেকনাফ, নিহত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন