দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই বাংলাদেশের

fec-image

বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলেরই এটি আসরের পঞ্চম ম্যাচ। তবে পয়েন্ট তালিকার হিসাবে দুই দল অবস্থান করছে টেবিলের দুই মেরুতে। এখন পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলে প্রথমটিতেই জয় তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙার অভিযানে এবার শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) হারের বৃত্ত ভাঙার মিশন নিয়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বেলা আড়াইটায় মাঠে নামবে সাকিব বাহিনী। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানকে হারিয়ে। তার পরে শুধু পরাজয়ের বৃত্তেই থেকেছে। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে সঙ্গী হয়েছে হতাশা। এমন বাজে পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের সামনে এখন পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা দল। নিজেদের বিধ্বস্ত অবস্থার পরও বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান স্বপ্ন দেখছেন ঘুরে দাঁড়ানোর।

অবশ্য সেমিফাইনালের স্বপ্ন সত্যি করতে ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্পও নেই বাংলাদেশের। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের ম্যাচের পর বাংলাদেশ ইডেনে খেলবে পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দিল্লিতে এবং পুনেতে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়ার। স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে পরের পাঁচ ম্যাচের সবকটিই সমান গুরুত্বপূর্ণ সাকিব আল হাসানের দলের জন্য।

বিশ্বকাপের মাঝপথে এসে সোমবারই প্রথমবারের মতো সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব সেই স্বপ্নের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন, ‘স্বপ্ন তো… এখনও ওই সম্ভাবনা আছে। আমরা (ভালো করতে) না পারলেও অন্যরা আমাদের সাহায্য করছে। ওইরকম যদি হতেই থাকে আর আমরা যদি নিজেদের একটু এগিয়ে নিতে পারি, স্বপ্ন সত্যিও হয়ে যেতে পারে। এখনও তো খুব ভালো সুযোগ আছে। এতো তাড়াতাড়ি হতাশ হবেন না, শেষ হলে হতাশ হয়েন। মন ভরে হতাশ হয়েন (হাসি)। কোনও সমস্যা নেই।’

স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে ওয়াংখেড়েই বিজয় নিশান উড়াতে হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। তবে ব্যাটিং বান্ধব এই উইকেট ভালো করার প্রধানতম শর্তই হচ্ছে বোলারদের ভালো করা। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিবও তার বোলারদের দিকেই তাকিয়ে আছেন, ‘বোলাররা আগে অনেক ভালো করে আসছে। ছন্দে আছে কি নেই তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। কালকের ম্যাচে কতটা ভালো করতে পারবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি কালকের ম্যাচে সবাই মিলে বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিং ভালো করতে পারি, তাহলে ভালো কিছু সম্ভব। আমাদের সামর্থ্য আছে, বিশ্বাস রাখি অন্তত ওয়ানডেতে ভালো খেলি। তাহলে যেকোনও দলের সঙ্গেই জেতার সামর্থ্য রাখি।’

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ চার ম্যাচের তিনটিই তারা জিতেছে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে উদ্বোধনী ম্যাচেও প্রোটিয়াদের হারিয়েছে তারা। এরপর তাদের মাটিতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশ জেতে ২-১ ব্যবধানে। এ পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে বেশ আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। জয়ের স্বপ্নও দেখাচ্ছে, ‘এখান থেকে জিতে যেতে পারলে মোমেন্টাম আমাদের সঙ্গে আসবে, খুবই ভালো অবস্থানে চলে আসবো। যদিও খুব একটা ম্যাচ জিতিনি, তবে পয়েন্ট টেবিল দেখলে খুব একটা বাজে অবস্থায়ও নেই (হাসি)। অন্যান্য দল আমাদের সহায়তা করছে। এখন আমাদের দায়িত্ব নিজেদের সাহায্য করে কতটা ভালো অবস্থায় যেতে পারি।’

বাঘা বাঘা দলগুলোকে নাস্তানাবুদ করে এমনিতেই উজ্জীবিত দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপরও বাংলাদেশকে সমীহ করছে প্রোটিয়া দল। কারণ বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড ভালো নয়। চারবারের মুখোমুখিতে দুইবারই প্রোটিয়ারা হেরেছে।

ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা এইডেন মারক্রাম স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বেশ সতর্ক হয়ে মাঠে নামবেন তারা, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে যখনই আমরা খেলি সেটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। অতীতে তাদের বিপক্ষে খুব বেশি ভালো করিনি। সেটা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে এবং সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা যা করেছি, সেটা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। ইনটেনসিটি ও স্ট্যান্ডার্ডের দিকে আমরা বেশি ফোকাস করতে চাই। সেটা যদি আমরা ঠিক রাখতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস দিনটি আমাদের হবে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন