দীঘিনালায় ঐতিহ্য আর উৎসবের আমেজে পহেলা বৈশাখ উদযাপন : চলছে ৫ দিনব্যাপী মেলা

D11

মোঃ আল আমিন, পার্বত্যনিউজ:

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা, উৎসব আর ঐতিহ্যের মিশেলে উদযাপিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশের অন্যান্য অংশের সাথে কোন অংশেই যেন পিছিয়ে থাকতে চায় না দীঘিনালা। পাহাড়িদের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উৎসব বৈসাবি পালন ছিল এখানকার বিশেষ আকর্ষন। চাকমাদের বিঝু আর ত্রিপুরাদের বৈসু পালিত হয়েছে নিজ নিজ ঐতিহ্য, ধর্মীয় ও লোকজ সংস্কৃতির আলোকে।

গত ১২ এপ্রিল শুরু হয়েছে পাহাড়িদের ৩ দিনব্যাপী (৩০ ও ৩১ চৈত্র ও পহেলা বৈশাখ) বৈসাবি উৎসব। নদীতে ফুল দিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসবে ছড়াছড়ি ছিল নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কেতার। তবে উৎসব উদযাপনের নামে অসামাজিক কর্মকান্ডের মত নেতিবাচক খবরও এসেছে।

এখানকার বাঙালিরাও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত মেতে ছিল পহেলা বৈশাখ নিয়ে। ছেলেরা পাঞ্জাবী বা ফতুয়া আর মেয়েরা শাড়ি পরেছিল বৈশাখী ঢঙে। দীঘিনালা উপজেলার মেরুং-এ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পরিবর্তন’ কতৃক পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছে ৫ দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার। আজ (সোমবার) চলছে মেলার দ্বিতীয় দিন, চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। সরেজমিনে মেলায় উপছে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নারী-পুরুষ ও শিশুদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল মেলায়। অধিকাংশের পোশাকে ছিল বৈশাখের ছাপ। মেলায় পান্তা ইলিশের স্টল সহ প্রায় ৭০-৮০ টি স্টল অংশগ্রহন করেছে বলে মেলার আয়োজকেরা জানিয়েছেন।

 মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান ও ‘পরিবর্তন’-এর সভাপতি মোঃ কাজী বিল্লাল হোসেন জানান, মূলত পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে এ মেলার আয়োজন করেছে সামাজিক সংগঠন ‘পরিবর্তন’। এই মেলা আয়োজনের মাধ্যমেই আমাদের এই ‘পরিবর্তন’ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। তিনি আরও বলেন, এই মেলা প্রথমবারের মত আয়োজন করা হলেও, আগামীতেও নিয়মিত আয়োজন অব্যাহত রাখবে ‘পরিবর্তন’।

এদিকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে গতকাল (রবিবার) দীঘিনালা জোনে সেনাবাহিনী কতৃক আয়োজন করা হয়েছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পান্তা-ইলিশ ভোজের। আমন্ত্রন করা হয়েছিল উপজেলার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ, উর্ধ্বতন সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তিত্ব, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ গনমাধ্যম কর্মীদের। দীঘিনালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় ও জোন কমান্ডার লে. কর্নেল লোকমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জোন কমান্ডারের সহধর্মীনি রোজিনা আক্তার জাহান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহনকারী শিল্পীদের পুরস্কৃত করেন প্রধান অতিথি। এরপর সকল অতিথিবৃন্দকে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী পান্তা-ইলিশ দিয়ে আপ্যায়ন করানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন