পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তিতে বৈষম্যের শিকার বাঙালিরা

CHTDB-

স্টাফ রিপোর্টার :

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ শিক্ষাবৃত্তিতে বাঙালিরা চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে। জনসংখ্যার দিক থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের ৪৮ শতাংশ বাঙালি তাদের জন্য মাত্র ২৩ শতাংশ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন উপজাতি তথা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশ অধিবাসীদের জন্য ৭৭ শতাংশ শিক্ষাবৃত্তি বরাদ্দ করা হয়েছে। আর ২৩ শতাংশ বাঙালি শিক্ষার্থীদের তালিকায় মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দু ও বড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও রাখা হয়েছে। ফলে বৈষম্যের শিকার হয়েছে তারাও।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে বলেন, ‘আমি এখন ঢাকায় রয়েছি। আগে এর চেয়ে বেশী পেয়েছে কিনা  সব কিছু না দেখে আমি কিছু বলতে পারব না।’

এ দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ শিক্ষাবৃত্তিতে এ বৈষম্যের কারণে ক্ষোভে ফুঁসছে বাঙালি শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে মুসলিম, হিন্দু ও বডুয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য’র প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ। সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বৈষম্যে’র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায় পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাব্বির আহম্মদ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার জাহান খান ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছাদেকুর রহমান।

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি তালিকা গত ২৬ জুলাই প্রকাশ হয়। উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশিত তালিকা থেকে জানা গেছে, দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও অনার্স স্তরে অধ্যয়নরত প্রতিজনকে ৫ হাজার টাকা এবং কলেজ ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ৪ হাজার টাকা প্রদান করা হবে।

খাগড়াছড়ি জেলায় দেওয়া হয়েছে মোট ১শ’ ৫৮ জন ছাত্রছাত্রীকে। এর মধ্যে উপজাতি শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া হয় ১শ’ ২১ জন আর মাত্র ৩৭ জন দেওয়া হয় বাঙালি (মুসলিম, হিন্দু ও বডুয়া) শিক্ষার্থীকে।

রাঙামাটি জেলায় দেওয়া হয়েছে মোট ১শ’ ৫৯ জন ছাত্র-ছাত্রীকে। এর মধ্যে উপজাতি শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া হয় ১শ’ ১৩ জন আর মাত্র ৪৬ জন দেওয়া হয় বাঙালি (মুসলিম, হিন্দু ও বডুয়া) শিক্ষার্থী এবং বান্দরবান জেলায় দেওয়া হয়েছে মোট ১শ’ ৫৮ জন ছাত্রছাত্রীকে। এর মধ্যে উপজাতি শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া হয় ১শ’ ৩০ জন আর মাত্র ২৮ জন দেওয়া হয় বাঙালি (মুসলিম, হিন্দু ও বডুয়া) শিক্ষার্থী।

সর্বমোট ৪শ’ ৭৫ জনের মধ্যে উপজাতি শিক্ষার্থীদেরকে দেওয়া হয় ৩শ’ ৬৪ জন আর মাত্র ১১১ জন দেওয়া হয় বাঙালি (মুসলিম, হিন্দু ও বডুয়া) শিক্ষার্থীকে।

বিভিন্ন স্তরের বাঙালি নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দিন দিন শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদেরকে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে। অবিলম্বে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে জনসংখ্যানুপাতে সকল সুযোগ-সুবিধা বণ্টনের দাবি জানান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে একজন বাঙালি প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়ারও জোর দাবি জানান তারা। এই জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন