পেকুয়ায় জমির বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে মহিলাসহ আহত ১২

fec-image

কক্সবাজারের পেকুয়ায় খাস জমি দখলের বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তঃসত্বা মহিলাসহ অন্তত উভয় পক্ষের ১২জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলাপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মহিলাসহ তিনজনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক। গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ সময় আহত হয়েছেন, ওই এলাকার মৃত নুরুল আলমের স্ত্রী রাশেদা বেগম(৫০), তার পুত্র মুনির আলম (৩৮), তারেকুল ইসলাম(৩২), মো. ফারুক(১৯), মো. ইদ্রিস(৩০), মেয়ে মিলি আকতার(১৭), পঞ্চম শ্রেণীর স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী মনিফা আকতার (১০) ও ছৈয়দনুরের অন্তঃসত্বা স্ত্রী সুখি ইয়াসমিন (৩৫)। অপর পক্ষের আহতরা হলেন মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র জাফর আলম(৬৫), আবুল হোসেনের স্ত্রী দিলুয়ারা(৪০), রমজান আলীর স্ত্রী মুনিরা ইয়াছমিন(৩৫), মনছুর আলমের স্ত্রী গোলচেহের(৪০), মোছলেম উদ্দিনের স্ত্রী মোস্তাফা খাতুন(৫৫) ও জাফর আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম(৪৫)। আহতদের মধ্যে নুরুল আলম গং এর মো. ফারুক(১৯), মুনির আলম(৩৮) ও তাদের মা রাশেদা(৫০)কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চরিপাড়া এলাকার ছৈয়দ আহমদের ছেলে জহিরুল আলম গং ও মৃত নুরুল আলমের ছেলে মুনির আলম গং এর মধ্যে সরকারি খাস ৩৪ শতক জমি নিয়ে বিগত কয়েক মাস পূর্ব থেকে বিরোধ চলছে। এরই জের ধরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

উভয় পক্ষের পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। এদিকে আহত মৃত নুরুল আলমের স্ত্রী রাশেদা বেগম অভিযোগ করেন জায়গাটি আমার দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় এবং বসতভিটা। ঘটনার দিন রাজাখালী ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুরের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা আমার বসতভিটা সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন আমার দখলীয় উক্ত খাস জায়গাটি থেকে আমার বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে জহিরুল আলম গং সন্ত্রাসী কায়দায় দখল করার জন্য দীর্ঘদিন পায়তারা করছে। সর্বশেষ ঘটনার দিন চেয়ারম্যান সহ সন্ত্রাসীরা আমার বসতঘর গুড়িয়ে দেয়। আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

অপর পক্ষের জহিরুল আলম জানান, রাজাখালী মৌজার বন্দোবস্তিকৃত খতিয়ান নং ১৯৮/২১৩, জোত নং ৩৩১, বি.এস দাগ নং ৪৩০২, ৪৩০৩ এর বন্দোবস্তিপ্রাপ্ত ৮৪শতক জমির মালিক হই। গত ৪০ বছর ধরে বন্দোবস্তিকৃত ওই দখলীয় জমিতে লবণের মাঠ করে আসছি।

গত তিন মাস পূর্বে আমাদের দখলীয় জমিতে জোর পূর্বক ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালায় প্রতিপক্ষ মুনির আলম গং। জবর দখলের চেষ্টার বিষয়টি পেকুয়া থানা পুলিশকে অবগত করেছি। ঘটনার দিন কুচক্রী মহলের ইন্ধনে প্রতিপক্ষের লোক আমাদের জায়গায় ঘর নির্মাণ করলে আমরা তাঁদের বাধা দেই। ওই সময় উভয়পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।

রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছৈয়দনুর জানান, দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ৪নং ওয়ার্ডের আজু মেম্বারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে এটি বিচারাধীন রয়েছে। ঘটনার দিন জমি দখলে নিতে দু’পক্ষ মাঠে নামে। এর জের ধরে এ সংঘর্ষ হয়। আপনার উপস্থিতিতে গুড়িয়ে দেওয়ার হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার জমি বিরোধ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোন পক্ষের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আহত, জমির বিরোধের, পেকুয়ায়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন