ভারতীয় পত্রিকার দাবি

বাংলাদেশ থেকে ৭ হাজার উপজাতি শরণার্থি হয়ে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে

fec-image

বাংলাদেশ থেকে ৭ হাজার উপজাতি শরণার্থি হয়ে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছে বলে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। ভারতীয় ঐ পত্রিকাটির বরাতে দৈনিক মানবজমিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার প্রকাশিত এক রিপোর্টে ভারতীয় গণমাধ্যমটি দাবি করে, সাত হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি উপজাতি বর্তমানে মিজোরামে শরণার্থী হয়ে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণেই তারা বাংলাদেশ ছেড়ে মিজোরামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী এবং কুকি-চীন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) মধ্যে গত নভেম্বর মাস থেকে সশস্ত্র সংঘাত চলছে। এই বাহিনী কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামেও পরিচিত। এটি মূলত একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সন্ত্রাসী বাহিনী।

মিজোরামে শরণার্থি সঙ্কট প্রবল হচ্ছে দাবি করে রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে ক্রমশ তীব্র হচ্ছে শরণার্থী সংকট। আর এর পেছনে রয়েছে প্রতিবেশী মনিপুর রাজ্যের চলমান সহিংসতা। গত ৩ মে থেকে স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে টানা সহিংসতা চলছে মনিপুরে। আর এতেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মিজোরামে পাড়ি জমাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এরইমধ্যে মনিপুর থেকে আসা শরণার্থীর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। সেসময় ৩৫ হাজার মানুষ মিয়ানমার থেকে ভারতে প্রবেশ করে এবং মিজোরামে শরণার্থী হিসেবে থাকতে শুরু করে।

মিজোরাম মূলত খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে যাওয়া উপজাতিরা সেখানে সহজেই মিশে যেতে পারছে। চিন-কুকি কিংবা মিয়ানমার থেকে আসা জোমি গোষ্ঠীর মানুষেরা সবাইই মিজোরামের জো সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সংস্কৃতিতে মিল রয়েছে এবং তারা সকলেই খ্রিস্টান।

এদিকে মনিপুরের সংঘাতের কারণে এখন নতুন করে শরণার্থীরা যেতে শুরু করেছে মিজোরামে। মনিপুরের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪৫০ জনেরও বেশি। এছাড়া পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে শত শত বাড়িঘর, গাড়ি এবং দোকান পাট। মিজোরাম সরকার এখন মনিপুর, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শরণার্থীদের জন্য কেন্দ্র থেকে তহবিল চাইছে।

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কোনও আর্থিক সহায়তা দেয়নি। শরণার্থীদের মিজোরামের ১১টি জেলার বিভিন্ন শিবিরে রাখা হয়েছে। তবে অনেকেই শিবিরের বাইরে থাকে। কেউ কেউ আছে আত্মীয়দের বাড়িতে, কেউ আবার ভাড়া বাড়িতে থাকছে। কেউ কেউ গির্জা কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি সেন্টারে থাকছে। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা ১৬ মে এবং ২৩ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দুটি চিঠি লিখেছেন। তিনি মণিপুর থেকে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষদের ত্রাণ দেয়ার জন্য ১০ কোটি রূপির আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।

মিজোরামের হোম কমিশনার এইচ লালেংমাওইয়া বলেছেন, রাজ্যের একটি প্রতিনিধিদল পর্যটন মন্ত্রী রবার্ট রোমাওয়ার নেতৃত্বে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এরমধ্যে আছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় কুমার ভাল্লাও। বাস্তুচ্যুত লোকদের ত্রাণ দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে অর্থ দেয়ার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। লালেংমাওইয়া বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল। কিন্তু আমরা এখনও কোনও আর্থিক সহায়তা পাইনি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উপজাতি, বাংলাদেশ, ভারত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন