বান্দরবানে ইউএনপির জেলা ব্যবস্থাপক খুশিরায় ও তৈমুর সহ-সভাপতি আগষ্টিন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ

images9

জমির উদ্দিন:

বান্দরবানে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির জেলা ব্যবস্থাপক ও এনজিও সংস্থা তৈমুর সভাপতি খুশিরায় ত্রিপুরা এবং তৈমুর সহ-সভাপতি আগষ্টিন ত্রিপুরার বিরুদ্ধে সংস্থার ভূমি ও অনিয়ম-দূর্নীতির এবং অর্থ আত্মাসাতের অভিযোগ উঠেছে। দাতা সংস্থার প্রকল্প আত্মসাতের টাকা ফেরৎ দিতে তৈমুর ২০ একর ভূমি বিক্রির করার অভিযোগও উঠেছে।
জানা গেছে, বান্দরবান ইউএনডিপি’র জেলা ব্যবস্থাপক ও তৈমুর সভাপতি খুশিরায় ত্রিপুরা এবং তৈমুর সহ-সভাপতি আগষ্টিন ত্রিপুরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে এনজিও সংস্থা তৈমুর গঠনতন্ত্র লংঘন করে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে কার্যকরি পরিষদ গঠনে অবৈধ ভাবে পরিচালিত করছে সংস্থাটির সকল কার্যক্রম। অবৈধ কার্যকরি পরিষদের মাধ্যমে সংস্থাটির লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে খুশিরায় ও আগষ্টিন ত্রিপুরা।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক সংস্থাটির সাবেক কার্যাকরি পরিষদের কয়েকজন সদস্য অভিযোগে জানান, বেসরকারী এনজিও সংস্থা তৈমু ৭ সদস্যের কার্যকরি কমিটি বান্দরবান সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে অনুমোদর পায়। এর আলোকে উক্ত পরিষদ ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এক বছর পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়স্থ এনজিও ব্যুরো থেকে অনুমোদিত হয়। বান্দরবান ইউএনডিপি’র জেলা কর্মকর্তা খুশিরায় ত্রিপুরা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ২০০৭ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তৈমুর গঠনতন্ত্র লংঘন করে বৈধ কার্যকরি পরিষদ ভেঙ্গে দেয়। পরে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও পছন্দের ব্যাক্তিদের নিয়ে গঠনতন্ত্রের নিয়ম ভঙ্গ করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে। বর্তমান সদস্যদের অবহিত না করে সাবেক সদস্যদের গোপনে বহিস্কার করেন। উক্ত কমিটি বান্দরবান সমাজ সেবা থেকে অনুমোদন নিলেও এনজিও ব্যুরো থেকে এখনো অনুমোদন পায়নি। উক্ত অবৈধ কমিটির সদস্যদের নামে মাত্র রেখে নিজেরাই লক্ষ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব প্রকল্পেও ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সাবেক সদস্যরা অভিযোগ করেন, ডানিডার ৩৪ লক্ষ টাকা অর্থায়নে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের শিক্ষা ও সচেতনতা সৃষ্টি বিষয়ক প্রকল্পের ২৭লাখ টাকা আত্মসাত করে খুশিরায় ও আগষ্টিন ত্রিপুরা। কিন্তু আত্মসাতের বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়লে টাকা ফেরত চেয়ে ২০১০এর মার্চ মাসে চিঠি দেয় ডানিডার কর্তৃপক্ষ। এতে বাধ্য হয়ে খুশিরায় ত্রিপুরা ও আগষ্টিন ত্রিপুরা বান্দরবান মেঘলাস্থ তৈমুর নামে ২০একর জমি অবৈধভাবে ২২ লাখ টাকায় বিক্রি করে আত্মসাতের টাকা ফেরৎ দেয়। এব্যাপারে বান্দরবান খুশিরায় ত্রিপুরা বলেন, এলাকার উন্নয়নে ভালো কাজ করতে গেলে, কিছু ভূল-ত্রুটি হয়ে থাকে। আগষ্টিন ত্রিপুরাও বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সংস্থার বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে তৈমুর সাবেক নির্বাহী পরিচালক, কার্যকরি কমিটির কোষাদক্ষ এবং সংস্থার বৈধ সদস্য ধমিনিক ত্রিপুরা অভিযোগগুলো সত্যতা স্বীকার করে অভিযোগ করেন, তদন্ত করলে অনিয়ম-দূর্নীতির থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। অভিযোগকারীরা আরো জানান, তৈমুর গঠনতন্ত্রের উল্লেখ রয়েছে সংস্থার কোন সাধারণ সদস্য ও কার্যকরি সদস্য উক্ত সংস্থায় কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেলে এবং অন্য কোন সংস্থা বা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করলে তার সদস্য পদ বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু গঠনতন্ত্রের নিয়ম লংঘন করে ইউএনডিপির জেলা ব্যবস্থাপক খুশিরায় ত্রিপুরা তৈমুর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তৈমুর সাবেক সদস্যরা অভিযোগ করেন, প্রতি বছর একবার করে সকল সদস্যদের নিয়ে সভা-সমাবেশ ও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনে গঠনতন্ত্রে বাধ্যবাদকতা থাকলেও গত ৬ বছরের একটি সভা-সমাবেশ বা সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হয়নি। উক্ত দুই ব্যক্তি তৈমুকে একটি দূর্নীতি ও সেচ্ছাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন