বান্দরবানে সন্ত্রাসী হামলায় এক বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৩১ জন

fec-image

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এই জেলাকে বলা হতো নৈসর্গিক লীলাভ‚মি এবং সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় বান্দরবান। জেলাতে ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে বলে স¤প্রীতির জেলাও বলা হতো। কিন্তু গত তিন বছর ধরে গুম, খুন, নির্যাতন, নিপীড়ন, অপহরণ ও নানা চাঁদাবাজির ফলে অশান্ত হয়ে উঠেছে এ জেলার পরিবেশ। তাছাড়া নতুন সংগঠন কেএনএফ গজিয়ে ওঠার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে বেড়েছে আতঙ্ক। দুর্গম এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্ক আর ভয় নিয়ে জীবনযাপন করছেন। পাহাড়ে আগের মতো শান্তির ও শৃঙ্খলা ফিরে আসুক সেটি চান জেলার সর্বস্তরের মানুষ।

শান্তির চুক্তির পর ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ২৬ বছরে প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ। ২০১৯ সালে খুন হয়েছে ৬ জন, ২০২০ সালে ১১ জন, ২০২১ সালে ৪ জন, ২০২২ সালে ১৮ জন ও ২০২৩ সালে খুন হয় ২৬ জন এবং সেনা সদস্য খুন হয় ৫ জন, আহত হয় অন্তত ৬ জন। এছাড়াও র‌্যাবের অভিযানে পাহাড়-সমতল মিলে ৫৫ জন জঙ্গি সদস্য এবং কেএনএফের ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি বান্দরবানের থানচি-রুমা দুই উপজেলা সীমান্তের রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের গহীন অরণ্যের লিটক্রে নতুন নির্মাণাধীন সড়কের ২৪ কিলোর নতুন ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় র‌্যাবের সাথে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জঙ্গি বাহিনীর গুলি বিনিময় হয়। এসময় ৫ জঙ্গিকে আটক করে র‌্যাব। গোলাগুলির ঘটনায় র‌্যাবের ৮ জন সদস্য আহত হয়। ১২ জানুয়ারি বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পাঁচ সদস্যকে আটক করে র‌্যাব। এরা হলেন, নিজামউদ্দীন উদ্দীন হিরন ওরফে ইউসুফ (৩০), সালেহ আহমদ ওরফে সাইহা (২৭), সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন (৩০), বাইজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াজ (২১), ইমরান বিন রহমান শিথিল (১৭)। ১৪ জানুয়ারি বান্দরবানে রোয়াংছড়ি তারাছা ইউনিয়নের উনিহ্লা হেডম্যান পাড়া এলাকা থেকে মংলুমাং মারমা (৪২) নামে এক ব্যক্তির ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ জানুয়ারি মাসে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে যৌথবাহিনী বাহিনীর বন্দুক যুদ্ধে কেএনএফ সদস্য বেনেট ম্রো (২৮) মারা যান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি অস্ত্র ও ৩৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা করে পুলিশ।

বান্দরবানের রুমায় ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বগালেক পাড়া গীর্জায় কীর্তন চলাকালে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএমএফ) সদস্যরা লালরাম চনহ্ বম লারাম (৪৩) নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রুমা সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হারমন পাড়া থেকে দার্জিলিং পাড়া যাওয়ার পথে পার্শ্ববর্তী রুনতং খুমী পাড়া পাহাড়ের একটি খাদ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। একই দিনে বান্দরবানের থানচিতে সাঙ্গু নদীর পদ্ম মোড় এলাকায় ২টি নৌকার মুখোমুখি সংঘর্ষে সামংগ্যা ত্রিপুরা (৫০) নামে এক নৌকা মাঝি নিহত হন। ৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের থানচি উপজেলার লোয়াংমুয়াল রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় টানা ১২ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দুর্দর্ষ ১৭ জঙ্গি ও কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের ৩ সদস্য আটক হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গোলাবারুদ ও নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ১২ ফেব্রুয়ারি বান্দরবান শহরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে আমেনা বেগম (৩৬) ও তার ৫ বছরের প্রতিবন্ধী মেয়ে আয়েশা বেগম নিহত হন।

১১ মার্চ বান্দরবানের আলীকদম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু আনতে গিয়ে মিসবাহ উদ্দিন নামে একজনের মৃত্যু হয়। এসময় আহত হয় আরো একজন। পরের দিনে বান্দরবানের থানচি লিক্রে সড়কের ২২ কিলোমিটার এলাকায় শ্রমিকবাহী দু’টি ট্রাকে সন্ত্রাসী হামলায় ট্রাক চালক মো. জালাল উদ্দিন (২৭) গুলিবিদ্ধ ও ইট ভাটার শ্রমিক মো. রুবেল (২৯) আহত হন। ট্রাক দু’টি সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য ইট নিতে ৪০ কিলোমিটার এলাকা থেকে থানচি আসার পথে সন্ত্রাসীরা অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ করে।

১৩ মার্চ বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং আহত হন আরো দুই সেনা সদস্য। ১৪ মার্চ বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেনসহ ৯ জঙ্গিকে আটক করে। এসময় র‌্যাব ৬টি দেশি বন্দুক ও ১টি বিদেশি অস্ত্র, ৫ রাউন্ড কার্তুজ, দূরবীন, সুইজ গিয়ার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী উদ্ধার করেছে।

আটককৃতরা হলেন, প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন (মাসুম) (২৫), আল আমিন সর্দার, ওরফে আব্দুল্লাহ (২৯), সাইনুন, ওরফে রায়হান (২১), তাহিয়াত চৌধুরী, ওরফে পাবেল (১৯), লোকমান মিয়া (২৩), ইমরান হোসেন, ওরফে শান্ত (৩৫), আমির হোসেন (২১), আরিফুর রহমান (২৮), শামিম মিয়া (২৪)। পরের দিন বান্দরবানে থানচিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মংক্যচিং মারমা (৪৫) নামে এক জুমচাষীকে কুপিয়ে হত্যা করে তার প্রতিপক্ষ।

২০ মার্চ বান্দরবানের রুমার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের সুনসং পাড়া ও থাইক্ষ্যং পাড়া থেকে ট্রাক গাড়িতে করে রুমা বাজারে আসার পথে পাহাড়ের গভীর খাদে পড়ে পাঁচজন নারী ও একজন শ্রমিকসহ ঘটনাস্থলে ছয়জন নিহত এবং আহত হন অন্তত ১৪ জন। নিহত পাঁচ নারী হলেন- নুনথারময় বম (৩৫), লিমময় বম (২৩), লালভারকিম (৪০), জিংঠাতসিয়াম (১৫), জিংহোম বম(৪৫) ও অপর একজন হ্লাগ্যপ্রু খিয়াং (৪৫)। পরের দিন রোয়াংছড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনায় থমচু বম (৭৪) নামে একজন নিহত ও আহত হন আরো দুইজন। পরে রামথারপাড়া এলাকায় থমচু বমের (৭৪) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

৭ এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাং পাড়ায় রাতে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ সংস্কার) মধ্যে দফায় দফায় গুলিবর্ষণ হয়। এসময় গোলাগুলিতে ৮ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন- ভান দু বম, সাং খুম, সানফির থাং বম, বয়রেম বম, জাহিম বম, লাললিয়ান ঙাক বম, লালঠা জার বম। ২৭ এপ্রিল দুটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বমরামসাং বম (২৩) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে সংবাদ পেয়ে মুলপি পাড়ার গভীর অরন্য থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

৮ মে রোয়াংছড়ি উপজেলায় দুই সশস্ত্র গ্রুপের গোলাগুলিতে ৩ জন নিহত হন। উপজেলার ক্যাপ্লাং ও পাইখ্যং পাড়ার মধ্যবর্তী জঙ্গল থেকে অজ্ঞাত তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। ১৬ মে সেনাটহল দল জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুইজন অফিসার ও দুই সৈনিক আহত হয়। আহতদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সিএমএইচ চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত করা হয়।

পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যায়। পরের দিন রুমা উপজেলায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে জুয়েল ত্রিপুরা (২৭) নামে একজন নিহত হন ও আহত হন আব্রাহাম ত্রিপুরা (৩৫) নামে আরো একব্যক্তি। ২৩ মে রুমা ও থানচি লিক্রে সীমান্ত সড়কের ধোপানিছড়া এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র পুঁতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে মো. রাশেদ (১৮) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় ও অপর এক শ্রমিক গুরুতর আহত হন। পরের দিনে বান্দরবান সদর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মেদুসে মার্মা (৩৫) নামে এক মোটর সাইকেল চালকের মৃত্যু হয়।

ছবি: কেএনএফের হামলা নিহত ৫ সেনা সদস্য

 

১ জুন মাসে রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করে। এসময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে সৈনিক তুজাম (৩০) প্রাণ হারান। ১৭ জুন রুমায় ছিলোপি পাড়ায় কেএনএফের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সৈনিক মোন্নাফ হোসেন রাজু (২১) নিহত হন। এ ঘটনায় অপর সৈনিক মো. রেজাউল (২৪) গুরুতর আহত হন।

আগস্ট মাসের শুরুর দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে টানা সাত দিনের অতিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে বন্যার সৃষ্টি হয় কক্সবাজার এবং বান্দরবানে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বান্দরবানে। বান্দরবান সদর, লামাসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রুমা এবং রোয়াংছড়ি উপজেলার বাসিন্দারা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় দীর্ঘদিন বিদ্যুৎহীন ছিল ওই দুই উপজেলার মানুষ। এমনকি বন্যার পানিতে চট্টগ্রামের কেরানীরহাট থেকে বান্দরবান সদরে যাওয়ার রাস্তা তলিয়ে যাওয়ার কারণে সাময়িকভাবে পুরো জেলাই দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর অক্লান্ত চেষ্টায় রুমা, রোয়াংছড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হয়।

২২ সেপ্টেম্বর রোয়াংছড়ি তারাছা ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার লতাঝিড়ি (বই খ্যং) এলাকায় মদ পান অবস্থায় কথা কাটাকাটির জেরে ক্যথুইপ্রু মারমাকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করে তার বন্ধু মংরে মারমা (৩৭)। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে যান। ২৮ অক্টোবর থানচি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নে সাঙ্গু নদীতে নৌকা ডুবে তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন- লং রে খুমি (২১), লংবে খুমী (৪৫) ও ছাই খুমী (৩০)। ১৬ নভেম্বর বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কে ট্রাক খাদে পড়ে আহম্মদ রশিদ (৬০) নামে একজন নিহত হন। একই ঘটনায় জয়নাল (৩৮) ও আবুল হাশেম (৩০) নামে আরও দুইজন আহত হন।

জনা গেছে, গেল ২০২২ সালের এপ্রিলের দিকে বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, ম্রো ও খুমি এই পাঁচ জাতিগোষ্ঠির নিয়ে গঠিত সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আলোচনায় আসে। তারা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম এই উপজেলাগুলো নিয়ে আলাদা রাজ্যের দাবি করে আসছিল। এরপরই জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে অভিযান চালায় র‌্যাব। এরপর থেকে দফায় দফায় সেনাবাহিনীসহ পাহাড়ের অন্যান্য সংগঠনের সাথে গোলাগুলিতে লিপ্ত হয় কুকি-চীন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)।

এদিকে পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়ে আনতে গত ২২ জুন পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লার নেতৃত্বে কেএনএফের সাথে শান্তি আলোচনার জন্য ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই শান্তি কমিটি ১৯ জুলাই, ৪ আগস্ট, ২১ সেপ্টেম্বর তিন দফায় কেএনএফের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন। তৃতীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এর পর থেকে সরাসরি বৈঠকে অংশ নেবেন উভয় পক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতেই কেএনএফ এবং শান্তি কমিটির মধ্যে চতুর্থ বৈঠকটি হয় গত ৫ নভেম্বর, এটি ছিল উভয় পক্ষে মধ্যে সরাসরি প্রথম বৈঠক হয়। এসব বৈঠকের পর কিছু বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় বান্দরবানের পাহাড়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। এরপর নিজে জন্মভিটে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মারমা, বম, খুমি, খিয়াংসহ আরো কয়েকটি জনগোষ্ঠির সদস্যরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১১ মাস পর নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য চট্টগ্রাম, বান্দরবান, সন্ত্রাসী হামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন