কেএনএফ ইস্যুতে নড়েচড়ে বসেছে সরকার

fec-image

বান্দরবানের থানচি ও রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র ছিনতাই, লুটপাটসহ কেএনএফের হামলার চার দিন পরও আতঙ্ক কাটেনি স্থানীয়দের মাঝে।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, হামলাকারীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। একইসাথে তিনি অভিযোগ করেন, পাশের দেশের সন্ত্রাসীদের অস্ত্র ব্যবহার করছে কেএনএফ।

তবে ঘটনার চারদিন পার হলেও এখনো যেন আতঙ্ক কাটছে না রুমা সদরে। যেখানে গেল ২ এপ্রিল রাতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালায় কেএনএফ। সেই ঘটনার পর থেকে থমথমে পাহাড়ি এই উপজেলা শহর। ফেরেনি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে চলছে যৌথ বাহিনীর অভিযান। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার সকালে রুমা পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুরে দেখেন ঘটনাস্থল সোনালী ব্যাংক, উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদসহ বিভিন্ন স্পট। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের কাছে শোনেন ঘটনার বিস্তারিত। কথা বলেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। পরে জানান, সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। হামলা রুখতে প্রশাসনের ব্যর্থতা থাকলে খতিয়ে দেখে নেয়া হবে ব্যবস্থা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রুমা এমন একটি জায়গায়, যে জায়গায় কোনোদিন এ ধরনের একটা অশান্ত পরিবেশ হবে আমরা চিন্তা করিনি। আমরা সবসময় দেখেছি, শান্তিপ্রিয় মানুষগুলো এই এলাকায় থাকেন। হঠাৎ করে এই ঘটনা কেন ঘটলো, এটাই আজকে আমাদের কাছে প্রশ্ন।

তিনি বলেন, ডাকাতির মূল উদ্দেশ্য ছিল বোধ হয় অর্থ সংগ্রহ করা, এখন পর্যন্ত আমরা যা মনে করছি। আমরা সবকিছুই দেখবো। অস্ত্র সহকারে এবং পোশাক সহকারে এখানে ঢুকবে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে- এটাও কাম্য নয়। যা করার নিরাপত্তা বাহিনী এখন সেটা করবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাবো। আমরা কোনো ক্রমেই আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে আর দেবো না। এই শান্তিপ্রিয় এলাকায়, যেখানে শান্তির সুবাতাস সবসময় বইতো, এখানে অশান্তি হোক এটা আমরা চাই না। আমরা অবশ্যই এর কারণ, কারা করেছে, কাদের সহযোগিতা ছিল- সবগুলো বের করবো এবং আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। পরে বান্দরবান সদরে মন্ত্রী বৈঠক করেন প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা প্রধান ও জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে। নির্দেশ দেন যেকোনো মূল্যে সন্ত্রাসীদের নির্মূলের।

এদিকে, হামলাকারীদের সঙ্গে আশপাশের সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশে যারা ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের কাছ থেকে অস্ত্রশস্ত্র এসেছে বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংক ম্যানেজারকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

অন্যদিকে, দু’দফা হামলার পর আতঙ্ক আছে থানচিতেও। দোকানপাট খুলেছে খুবই কম। শনিবারও কিছু মানুষকে দেখা গেছে ভয়ে এলাকা ছেড়ে যেতে। এমন পরিস্থিতিতে জীবনযাপনে ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সন্ত্রাসী হামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন