মা‌টিরাঙ্গায় মাল্টা বাগা‌নে সব‌জি চাষ

fec-image

বাংলাদে‌শে কৃ‌ষিজ‌মি না বাড়‌লেও ক্রমাগত ভা‌বে বাড়‌ছে জনসংখ‌্যা ও দৈন‌ন্দিন চা‌হিদা। ফ‌লে দিন দিন বি‌দেশ হ‌তে আমদা‌নি নির্ভর হ‌তে হ‌চ্ছে । তাই দে‌শের চা‌হিদা পূর‌ণে আধু‌নিক ও প্রযু‌ক্তিগত পদ্ধ‌তি‌তে প‌রি‌মিত ও প‌তিত কৃ‌ষি জ‌মি‌ কে কা‌জে লা‌গি‌য়ে একই জ‌মি‌তে সমন্বীত চা‌ষের মাধ‌্যমে চা‌হিদা পূর‌ণে বি‌ভিন্ন কর্মসূ‌চির আওয়তায় কৃষক‌দে‌রকে উদ্ভুদ্ধ কর‌ছে সরকার। আস‌ছে তা‌তে সফলতা।

কৃ‌ষি‌তে নতুন নতুন উদ্ভাবন, আধু‌নিকায়ন, বৈজ্ঞা‌নিক পদ্ধ‌তি‌তে চাষাবাদ, সরকা‌রের প্রনোদনা, সার, বীজ প্রদানসহ কৃ‌ষি বিভা‌গের সা‌র্বিক সহযো‌গিতায় সমন্বিত সব‌জি চা‌ষে লাভবান হ‌চ্ছেন পাহা‌ড়ের প্রা‌ন্তিক কৃষকগণ। এ‌তে ক‌রে এক দি‌কে যেমন কৃষকরা লা‌ভের মুখ দেখ‌ছেন, অপর দিকে দিন দিন পাহা‌ড়ে কৃ‌ষি‌তে আগ্রহী হ‌চ্ছেন কৃষকরা।

সম্প্রতি খাগড়াছ‌ড়ির মা‌টিরাঙ্গায় কৃ‌ষি বিভা‌গের সা‌র্বিক সহ‌যো‌গিতায় মাল্টা বাগা‌নে সম‌ন্বীত সব‌জি চাষ ক‌রে এলাকায় আ‌লোড়ন সৃ‌ষ্টি ক‌রে‌ছেন কৃষ‌ক আব্দুল হা‌কিম।

স‌রেজ‌মি‌নে দেখায়ায়, এক একর (১০০ শতক) জমি‌তে গত দুই বছর আ‌গে ১৬০টি মাল্টার চারা দি‌য়ে বাগান করেন। একই জমি‌তে ‌মি‌ষ্টি কুমড়া, টমেটো, ম‌রিচ, বা‌রিসিম-১, ধ‌নিয়াপাতা, বাঁধাক‌পি গোলআলুসহ বি‌ভিন্ন সব‌জি চাষ ক‌রে‌ছেন কৃষক আব্দুল হা‌কিম। এ‌তে ক‌রে একই জ‌মি‌তে বছ‌রে মাল্টা ছাড়াও একা‌ধিক সব‌জি চাষ ক‌রে স্থানীয় ভা‌বে সব‌জির চা‌হিদা পূরণ হ‌চ্ছে। আ‌র্থিকভা‌বে লাভবান হ‌চ্ছেন তিনি। অপর দি‌কে মাল্টা গা‌ছের জন‌্য আ‌লেদাভা‌বে প‌রিচর্জার প্রয়োজন হয়না। এ‌তে ক‌রে সময় ও অর্থ খরচ হ‌চ্ছে কম।

কৃষক আব্দুল হা‌কিম বলেন, মাল্ট‌া আগে এই জমিতে ধান চাষ করে যা লাভ হতো, মাল্টা চাষ ও মাল্টা ক্ষে‌তে সমন্বিত সব‌জি চাষ ক‌রে তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি লাভ হচ্ছে। এ বছর মি‌ষ্টি কুমড়া, টমেটো, ম‌রিচ, বা‌রিসিম-১, ধ‌নিয়াপাতা,গোলআলু চাষ করে‌ছি। গত বছর মৌস‌মে ৩০ হাজার টাকা খরচ ক‌রে প্রায় দুই লক্ষা‌ধিক টাকার সব‌জি বি‌ক্রি ক‌রেছি। এ বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকা সব‌জি চাষে ব‌্যয় ক‌রেছেন। যেহেতু এ বছর সব‌জির দাম বেশি, তাই ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার সব‌জি বি‌ক্রি হ‌বে। পরিকল্পিতভাবে চাষ করলে ব্যবসার চেয়ে কৃষিকাজ করে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। কৃষিতে প্রযু‌ক্তিগত উন্নয়‌নে ব্যবসার পাশাপাশি সবজি চাষ করে তিনি সফল বলে দা‌বি ক‌রেন।

কৃষিবিদ ও উপসহকারী দেবাশীষ চাকমা জানান, আব্দুল হাকিম কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে সমন্বিত চাষাবাদ ক‌রে সফলতার পে‌য়ে‌ছেন। তাই তার সফলতা দেখে অনেকেই সম‌ন্বিত সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

উপ‌জেলা কৃ‌ষি কর্মকর্তা সবুজ আলী ব‌লেন, পাহা‌ড়ের মা‌টি ও আহাওয়া অনুকূলে হওয়ায় কম খর‌চে অ‌ধিক ফলন সহজ। যার কার‌ণে স্বল্প পুঁজি নিয়ে কৃষিক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হতে পারেন। তাছাড়া কৃ‌ষি‌তে আধু‌নিকায়নের ফ‌লে বৈজ্ঞা‌নিক পদ্ধ‌তি‌তে চাষাবা‌দ, সরকা‌রের প্রণোদনা, কৃ‌ষি বিভা‌গের নতুন নতুন উদ্ভাবন ও সা‌র্বিক সহ‌যো‌গিতায় দিন দিন কৃষকরা কৃ‌ষির প্রতি আগ্রহী হ‌চ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মাটিরাঙ্গা, মাল্টা বাগান, সবজি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন