রামুতে জমি জবর-দখলের উদ্দেশ্যে সুপারি বাগান সাবাড়

fec-image

কক্সবাজারের রামুতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বিপুল পরিমাণ ফলবান সুপারি গাছ কেটে দেয়া হয়েছে। এসব গাছ কাটার পর ওই স্থানে জোরপূর্বক বসত বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা চালালে স্থানীয়রা তা পন্ড করে দেয়।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হালদারকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উল্টো জমির মালিককে জড়িয়ে থানায় মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ দায়ের এবং আবারো হামলা চালিয়ে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জমির মালিক আবদুর রহিম ও সাইফুল ইসলাম জানান, তাদের ক্রয়কৃত জমিটি বাড়ির পাশ্ববর্তী হওয়ায় দীর্ঘদিন জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছনের ছেলে ছালেহ আহমদ। জবর-দখলের উদ্দেশ্যে ওইদিন সকালে ছালেহ আহমদ ও তার স্ত্রী বুলবুল আকতারের নেতৃত্বে এলাকার ভাড়াটে লোকজন আকস্মিকভাবে ঘেরা-বেড়া ভেঙ্গে ওই জমিতে প্রবেশ করে। এ সময় তারা সন্ত্রাসী কায়দায় জমিতে থাকা ফলবান ও সৃজিত বিপুল পরিমাণ সুপারি গাছ কেটে দেয়। এসময় গাছ কেটে খালি হওয়া জমিতে জোরপূর্বক বসত বাড়ি নির্মাণের চেষ্টা শুরু করে ছালেহ আহমদ ও তার সহযোগীরা। এসময় খবর পেয়ে জমির মালিক আবদুর রহিম ও সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারীরা তাদের জমিতে প্রবেশে বাধা দেয় এবং এ জমিতে আসলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। খবর পেয়ে রামু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে নিরুপায় হয়ে আবদুর রহিমদ এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিত করেন।

আবদুর রহিম আরও জানান, তিনি এবং তার ভায়রা সাইফুল ইসলাম ২০১২ সালে ৪০ কড়া জমি কিনে তাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। জমিটি তাদের বসতবাড়ি থেকে দূরে। এ সুযোগে ওই জমির পাশ্ববর্তী বাসিন্দা ভূমিদস্যু ছালেহ আহমদ পরিকল্পিতভাবে তার খতিয়ানভুক্ত ১৩ কড়া জমি জবর-দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমনকি জবর-দখল করতে না পেয়ে বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করেছেন।

রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার শহীদুল ইসলাম এবং ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজলুল হক জানান, এ জমি নিয়ে রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদে বিচার চলমান রয়েছে। চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে বিগত ১৫ রমজান জমিটি পরিমাপও করা হয় এবং সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দুপক্ষকে সেখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য বলা হয়েছিলো। কিন্তু ছালেহ আহমদ দুইজন ইউপি মেম্বারের নির্দেশ অমান্য করে গাছপালা কেটে ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালিয়েছে। এ কারণে বর্তমান দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এরপরও পরিষদের পক্ষ থেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রমজান আলী জানান, দলিল-খতিয়ান অনুযায়ি জমিটির মালিক আবদুর রহিম গং। কিন্তু জমিটি বাড়ির পাশে হওয়ার সুবাদে ছালেহ আহমদ জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমনকি গাছপালা কেটে ঘরও তৈরির চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু জমির মালিক আবদুর রহিম ও স্থানীয় জনতা তাতে বাঁধা দেয়ায় বাড়ি নির্মাণ করতে পারেনি। তিনি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছালেহ আহমদ জানান, জমিটি তার দীর্ঘদিনের দখলীয়। এজন্য তিনি আবদুর রহিম গং এর কাছ থেকে এটি কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা এ জমি বিক্রি করতে রাজি হচ্ছেনা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জমি, রামু, সুপারি বাগান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন