রামুর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহমেদুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আহমেদুল হক চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ২০১৪ সালে ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য রামু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আহমেদুল হক চৌধুরী বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। নির্বাচিত হওয়ার সাড়ে চারমাস পর ১১ আগস্ট তিনি ভারতের মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

আহমেদুল হক চৌধুরী রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসেরচর লামারপাড়ায় মরহুম সুলতান আহমদ চৌধুরীর ছেলে। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সকাল রামু চৌমুহনীস্থ বিএনপি কার্যালয়ে মরহুম আহমেদুল হক চৌধুরীর মাগফেরাত কামনায় কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা এবং মেজবান এর আয়োজন করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

॥ আহমেদুল হক চৌধুরীর কর্মময় জীবন ॥
আহমেদুল হক চৌধুরী (এমএ) ১৯৫১ সালে রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসেরচর লামারপাড়ায় খ্যাতিমান চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম সুলতান আহমদ চৌধুরী। আহমেদুল হক চৌধুরী রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি, কক্সবাজার সরকারী কলেজ হতে এইচএসসি, বিএ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস নিয়ে এমএ পাশ করেন। তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা বৃহত্তম চট্টগ্রামের প্রথম রাজবন্দি মরহুম আবদুল মজিদ সিকদারের নাতি। মরহুম আবদুল মজিদ সিকদারের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস রামু চৌমহনীতে এসে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন।

আহমেদুল হক চৌধুরী সমাজসেবক, রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিত্ব। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায় (চাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সমাজকল্যাণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষা জীবন শেষে কেমেস ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক লি: এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ৮/৯বছর চাকরি করেছিলেন। এসময় সমাজসেবার প্রতি ব্রত হয়ে রাউফাবাদ কলোনীতে রাউফাবাদ বহুমূখী সমবায় সমিতি গঠন করে শিক্ষিত যুব সমাজকে উন্নয়নমুখি কাজে সম্পৃক্ত করান। পরে এ চাকরি এস্তেফা দিয়ে নিজ এলাকায় চলে আসেন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন।

মিষ্টভাষী আহমেদুল হক চৌধুরী রাজনৈতিকভাবে শহীদ জিয়ার আদর্শের জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হলেও দল-মত ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখায় তিনি আজ রামুর এক সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি পরপর ৩ বার রামু উপজেলা বিএনপির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বৃহৎ উপাসনালয় সীমা বিহার ও মৈত্রী বিহারের জাদি পাহাড় এলাকায় ১২০ শতক জমি দান করেন তিনি। আলহ্জ্বা ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বেশ কয়েকবার তিনি সহ-সভাপতি ও কার্যকরি সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজারকুল মাছুমিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি এবং মৃত্যুর আগপর্যন্ত লামারপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন