রামু সমিতি ঢাকা’র ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত হলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ

রামু প্রতিনিধি:

নব নিযুক্ত নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেছেন, ঢাকাস্থ রামুবাসীরা যেভাবে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক যোগাযোগের যে বন্ধন অক্ষুন্ন রেখেছেন, তা বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চলের জন্য অনুকরণীয় ও দৃষ্টান্ত স্বরূপ। তিনি বলেন ঢাকাস্থ রামু সমিতি ঢাকাতে এক খন্ড কক্সবাজারেরই প্রতিচ্ছবি।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রামু সমিতি আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও রামু সমিতির উপদেষ্টা, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য রাখেন। তিনি নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশ্লিষ্ট যে কোন সাহায্য করার আশা ব্যক্ত করেন এবং অচিরেই কক্সবাজারকে স্মার্ট কার্ডের আওতায় আনার ঘোষণা দেন।

চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা  নিয়ে তিনি বলেন, একদিকে যখন মায়ানমার গণহত্যা চালাচ্ছে  তখন পাশের দেশ বাংলাদেশ উল্টোচিত্র ধারণ করে মানবতার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। তিনি কক্সবাজারকে ঘিরে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের তালিকা তুলে ধরেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ প্রকল্প, রেললাইন, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর সহ বিভিন্ন সময়োপযোগী প্রকল্প তুলে ধরেন তিনি।

রামু সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক বিচারপতি আমিরুল কবির চৌধুরী, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মাফরুহা সুলতানা, কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ, ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক আব্দুল মোমেন চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ মোস্তফা কামাল চৌধুরী, রামু সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ফণীভূষণ শর্মা, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া প্রমুখ।

প্রত্যেক বক্তাই রামু সমিতির উপদেষ্টা হেলালুদ্দিন আহমদের পদোন্নতিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাঁকে অভিনন্দিত করেন। বক্তারা বলেন, হেলালুদ্দিন আহমদ নির্বাচন কমিশনের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হওয়াই পুরো কক্সবাজার গর্বিত। তারা আশা প্রকাশ করেন, হেলালুদ্দিন আহমদ তার কর্ম কৌশল দিয়ে বরাবরের মতই নির্বাচন কমিশনকে গতিবান ও গ্রহণযোগ্য রাখতে অবদান রেখে যাবেন।

কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল ফোরকান আহমদ বর্তমান রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বলেন, মায়ানমার ও বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নিয়মিত ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের উপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, সরকার যেভাবে মানবতা দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তার পাশাপাশি সমস্যাটির আন্তর্জাতিক সমাধান হওয়া জরুরী যাতে ভবিষ্যতে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে না দাঁড়ায়।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় অধিদপ্তরের সচিব মাফরুহা সুলতানা বলেন, রামু তথা কক্সবাজারবাসীর জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা, যে কোন উন্নয়ন মূলক কাজে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে স্বাগত বক্তব্যে রামু সমিতির সাধারণ স¤পাদক সুজন শর্মা আগামি শীতে ঢাকাতে রামু উৎসব আয়োজনের ঘোষণা দেন যেখানে রামুর কৃষ্টি-সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ এর সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও রামুর প্রবীন ব্যক্তি আব্দুল খালেক মৃত্যুবরণ করায় শোক প্রস্তাব আনেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম। রামু সমিতির ঈদ পুনর্মিলনী ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ঢাকাস্থ রামুবাসীদের মিলনমেলায় রূপ নেয়। এতে রামু সমিতির  সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া রামু সমিতির অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকায় বসবাসরত রামুবাসীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন ও  সংহতি, পার¯পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্য রেখেই রামু সমিতি, ঢাকা এ বছর আয়োজন করেছে রামু উৎসব ও মেজবান, ইফতার মাহফিল, গোল টেবল বৈঠক। সংবর্ধিত করেছে বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রথম মহিলা সচিব ও আমাদের রামুর কৃতী সন্তান মিসেস মাফরুহা সুলতানাকে। যাকাত ফান্ড বিতরণ, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের সাহায্য, ব্লাড ব্যাংক সহ বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ডে ও অংশ নিয়েছে রামু সমিতি। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন