সোমবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছে ১৫ বছর বয়সী শিশু রেহেনা
স্টাফ রিপোর্টার :
১৫ বছর বয়সী শিশু রেহেনার কাছে বিয়ে মানে পুতুল খেলা। রেহেনার অসম্মতি সত্বেও তার বাবা-মা তৈরি করেছেন বিয়ের পিঁড়ি।
জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন রেহেনা ছিদ্দিকা। তার বাবার নাম রমজান আলী। পেশায় ব্যবসায়ী।
রেহেনা আক্ষেপ করে বলেন, আমি লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু মা-বাবা আমার কথা শোনেনা। জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আমি সকলের সহায়তা চায়।
কম বয়সে বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেহেনার বাবা রমজান আলী বলেন, মেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে অযথা টাকা খরচ করে কোন লাভ নেই, তাই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছি। আমি কারো কথা শুনবো না।
বাইশারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাস চন্দ্র দাশ বলেন, ২০১৪ সালের জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে রেহেনা। সে এখনো শিশু। তার একটি উজ্জল ভবিষ্যৎ রয়েছে। এ অবস্থায় মেয়ে বিয়ে দেওয়া একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।
এ ব্যাপারে বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। প্রশাসনের সহায়তায় বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম বলেন, বাল্য বিয়ে কখনো মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) এ এইচ এম তৌহিদ কবির বলেন, বাল্য বিয়ের সংবাদ পাওয়া মাত্র রবিবার (৩ জানুয়ারি) বিকালে পুলিশ সদস্যরা মেয়ে বাড়ি গিয়ে বিয়ের জন্য নির্মিত তোরুণ ভেঙে দিয়েছে। এসময় মেয়ের বাবাকে বাল্য বিয়ে বন্ধ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সোমবার রেহেনার বিয়ে উপলক্ষে সব আয়োজন শেষ করেছে তার পরিবার। এরই মধ্য কয়েক‘শ আত্মীয়-স্বজনকে বিয়ের আমন্ত্রণ পত্রও পরিবারের পক্ষ থেকে বিলি করা হয়েছে।
এখন দেখার বিষয় প্রশাসন কি ভূমিকা নেয়।