২ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা মামলায় ৭ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় ৭ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা নগদ অর্থদণ্ড, আনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদাণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মিয়ানমারের আকিয়াব পট্টুমনি থানার মেহেরপুরের মৃত আমির হামজার ছেলে এম. বেল্লাল হোসেন, মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে ইয়ার মোহাম্মদ, হাড়িপাড়ার আহাম্মদ হোসেনের ছেলে জামাল হোসেন, শাকের আলমের ছেলে মনজুর আলম, মৃত জালাল হোসেনের ছেলে মো. জাকির হোসেন, জয়নাল হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন ও সান্দামা এলাকার মৃত সবির রহমানের ছেলে আবদুর রহমান।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে শুনানি শেষে কক্সবাজার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম (৪)।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম।
মামলার নথির সূত্র ধরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. বেদারুল আলম।
তথ্য মতে, ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপের কাটাবনিয়া থেকে ৭/৮ নটিক্যাল মাইল দূরে সাগরে ধাওয়া দিয়ে কাঠের বোটসহ ৭ রোহিঙ্গা আটক করে কোস্টগার্ড। এ সময় তাদের ব্যবহারের বোট তল্লাশি চালিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ২ ডিসেম্বর থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করেন কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের পেটি অফিসার কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. আরশাদুল ইসলাম।
বিস্তারিত অনুসন্ধানপূর্বক ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘অভিযোগপত্র’ দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, টেকনাফ থানার পুলিশ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল জলিল খাঁন। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,২০১৮ এর ৩৮/৪১ ধারাসহ (৩৬)১ ধারার সরণির ১(গ) ক্রমিকে বর্ণিত শাস্তিযোগ্য অপরাধের ‘অভিযোগ’ গঠন করেন আদালত। ঘটনার ২ বছর ১ মাস পর রায় হয়েছে।
মামলার রায় প্রসঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, মাছের বোটের আড়ালে ইয়াবা পাচার করছিল মিয়ানমারের ৭ নাগরিক। পুলিশের প্রতিবেদনে তার প্রমাণ মিলেছে। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,২০১৮ এর ৩৮/৪১ ধারাসহ (৩৬)১ ধারার সরণির ১(গ) অনুবলে ৭ আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক।
আদালতের এমন রায় মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ’যুগান্তকারী ভূমিকা’ রাখবে মন্তব্য করেছেন এডভোকেট ফরিদুল আলম। বিচারে তিনি সন্তুষ্ট।