একটি সেতু ভীষণ দরকার : কাঠের সাঁকো নিয়েই যেন জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা
একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রাঙ্গামাটি শহরের বিহারপুর এলাকার হাজারো মানুষ। এই এলাকার মাঝখানে কাপ্তাই হ্রদ হওয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে নিজ উদ্যোগে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করেন এলাকাবাসী। নড়বড়ে এই কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পারাপার হতে হয় । কাঠের সাঁকো নিয়েই যেন তাদের জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাঙ্গামাটি শহরের একটি অবহেলিত জনপদের নাম বিহারপুর এলাকা। এই এলাকায় রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। প্রায় তিনশত পরিবার ঐ এলাকায় বসবাস করেন। এলাকাটি কাপ্তাই হ্রদের ওপারে হওয়ায় দুপারের মানুষের যাতায়েতে দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ। এছাড়াও স্থানীয় নারী-পুরুষ চিকিৎসা, ব্যবসা, বাণিজ্য ও হাটবাজার করতে সদরে প্রধান শহরের আসতে হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য হ্রদের ওপরে নেই কোনো সেতু। দীর্ঘ ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে নিজ উদ্যোগে কাঠের সাঁকো নিমার্ণ করে চলাচল করছে এই এলাকার মানুষ। এ জন্য অবহেলিত এই জনপদের মানুষের দুঃখের শেষ নেই। তাদের দুঃখ, দুর্দশা দেখে মনে হয় তারা স্বাধীন বাংলাদেশের বাইরে কোনো দ্বীপে বসবাস করছেন। এই এলাকার কোন মানুষ
অসুস্থ হলে এবং মারা গেলে তাদের নিয়ে পড়তে হয় নানা সমস্যায়।
তাই একটি সেতুর ভীষণ দরকার বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিহারপুর এলাকার কার্বারী প্রিয় জীবন চাকমা জানান, প্রায় ৬ মাস আগে ব্রীজ নিমার্ণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও রাঙ্গামাটি পৌরসভায় আবেদন করা হয়েছে।
কিন্তু পৌরসভা ব্রীজ মেরামত করতে ৪০ হাজার টাকা দেন এবং উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। দীর্ঘ ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে নড়বড়ে এই কাঠের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পারাপার হতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগে এলাকার মানুষ।
তিনি আরও জানান, ১০ থেকে ১২ বছর আগেও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে ব্রীজ নিমার্ণের জন্য আবেদন করা হয়েছিলো। এতেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তাই এই এলাকার মানুষের দুঃখ, দুর্দশা দূর করতে একটি ব্রীজের ভীষণ প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কমিশনার বিল্লাল হোসেন টিটু জানান, গত বছর কাঠে সাঁকো মেরামত করতে ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু এলাকাবাসীর সাথে রাজবন বিহারের দ্বন্ধ থাকার কারণে এখানে ব্রীজ নিমার্ণ করা যাচ্ছে না। তবে রাজবন বিহারের সাথে যদি এলাকাবাসীর দ্বন্ধ মিমাংসা হয়,তাহলে ব্রীজ নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আলম নিজামী জানান, আগামী এক বছরে মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে একটি ব্রীজ নির্মাণ করে দেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।