কেয়ারী ও আটলান্টিকে চড়ে সেন্টমার্টিন গেল ২৭২ জন পর্যটক

fec-image

দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস বন্ধ থাকার পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। গত দুইদিনে চারটি জাহাজে সেন্টমার্টিন গিয়েছে ৯১৪ জন যাত্রী।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়ার পর প্রথম দিন ৬১০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন ভিড়ে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস।

দ্বিতীয় দিন শনিবার ((১৪ জানুয়ারি)) কেয়ারী সিন্দাবাদ ১৭৪ এবং আটলান্টিক ক্রুজ ৯৮ জন পর্যটকসহ ১৩০ জন যাত্রী নিয়ে টেকনাফ ঘাট থেকে দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। অতিথিদের স্বাগত জানান জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

রবিবার থেকে চলবে আরো দু’টি জাহাজ শহীদ সুকান্ত বাবু ও ভাষা শহীদ সালাম।

দীর্ঘদিন পরে জাহাজ চলাচল করায় দ্বীপবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে পর্যটন ব্যবসা। দেখছে নতুন আশার আলো।

কেয়ারী ট্যুরস এন্ড সার্ভিস লিমিটেডের এজিএম এন্ড হেড অফ ট্যুরিজম এসএম আবু নোমান বলেন, প্রশাসনিক অনুমতি পাওয়া সাপেক্ষে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে আমাদের জাহাজ ছাড়ে। প্রথম দিনের যাত্রা উদ্বোধন করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান।

আটলান্টিক ক্রুজের ব্যবস্থাপক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় দীর্ঘদিন পর আবারো জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। শনিবার ১৩০ জন যাত্রী সেন্টমার্টিন গিয়েছে। সেখানে ৯৮ জন পর্যটক।

তিনি বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের খবরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ফোন দিচ্ছে। তারা খুশি। বুকিং দিচ্ছে অনেকে। আমরা পর্যটক সেবায় বদ্ধপরিকর।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (স্কোয়াব) এর সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনুমতি পাওয়ায় শুক্রবার প্রথম দিন এমভি পারিজাত ও রাজহংস নামের দুটি জাহাজ দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যায়। শনিবার কেয়ারি সিন্দাবাদ ও আটলান্টিক ক্রুজ চলাচল শুরু করে। অনুমতি পাওয়া অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে। তিনি বলেন, পর্যটকদের উন্নতমানের সেবা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে ট্যুর গাইডসহ সংশ্লিষ্টরা যথেষ্ট আন্তরিক।
জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পর কেমন পরিস্থিতি দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, দুইদিনে চারটি জাহাজ গেল। যারা যাচ্ছে তাদের মধ্যে বেশ আনন্দ-উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। তবে, যাত্রী সংখ্যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কম। প্রচারণা বাড়লে হয়তো আরো বৃদ্ধি পাবে। দীর্ঘদিন পরে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসী সন্তুষ্ট। তাদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি ।

প্রসঙ্গত, নাব্যতা সংকট দেখিয়ে পর্যটন মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না মিললেও কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, বে-ওয়ান ও বার আউলিয়া নামের তিনটি জাহাজ চলছিল ঠিকই।

বৈষম্যমূলক ভূমিকার কথা তুলে অবশেষে আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেয় টুয়াক, জাহাজ মালিক সমিতিসহ ১১টি সংগঠন। ১০ জানুয়ারি শহরের একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনও করেন তারা। এ বিষয়ে পরের দিন ১১ জানুয়ারি ঢাকায় বৈঠক হয়।

অনেক দেনদরবার, আবেদন ও বাস্তবতা বিবেচনায় অবশেষে ১২ জানুয়ারি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমোদন দেয় প্রশাসন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটক, সেন্টমার্টিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন