খাগড়াছড়িতে নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানালেন উপজেলা প্রশাসন
খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীতে ডুবে নিহত শিশু শামীম ও শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে নদীতে ডুবে প্রাণ হারানো ইটভাঙা শ্রমিক আলমগীরের পরিবারকে সমবেদনা জানালেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ভূমি অফিসার পিয়াস চন্দ্র দাশ ও গোলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা।
রোববার (১০ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় গঞ্জপাড়া নিহত শিশু শামীমের বাড়িতে পরিদর্শনে যান। পরে শালবাগানের নিহত আলমগীরের বাড়িতে সমবেদনা জানান। পরিদর্শনকালে পিয়াস চন্দ্র দাশের সফরসঙ্গী ছিলেন ৩নং গোলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা।
নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন ও সমবেদনা জানানোর সময় পিয়াস চন্দ্র দাশ অভিভাবকদের বলেন, ‘যে হারায় সে বুঝে, হারানোর ব্যথা কতোটা গভীর।সন্তানের লাশ বাবার কাঁধে এটা খুবই বেদনাদায়ক। আমাদের সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। আমরা নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি। আপনারা যেহেতু নদীর পাড়ে বসবাস করেন, আপনাদের সন্তানদের সচেতন করবেন, নিজেও সচেতন হবেন। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রতি সার্বক্ষণিক নজর রাখবেন। এমন ঘটনা যেন আর ভবিষ্যতে না ঘটে। সেদিকে সকলেই সজাগ থাকবেন।’
পরিশেষে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রশাসন নিহত পরিবারের মাঝে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান তুলে দেন।
জানা যায়, শিশু মো. শামীমের জীবন বাঁচাতে গিয়ে চেঙ্গী নদীতে ডুবে প্রাণ হারান ইট ভাঙার শ্রমিক মো. আলমগীর হোসেন। গত শনিবার ৯ জুলাই দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিত ঘটনাটি ঘটে। নদীর পাড়ে খেলার সময় নদীতে পড়ে যায় গঞ্জপাড়ার নূর আলমের ছেলে মো. শামীম(৭)।
এসময় মো. আলমগীর (২৫) ইট ভেঙ্গে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় শিশুটিকে ডুবতে দেখে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন। কয়েক ঘন্টার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা দু্ই জনকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার দীপা ত্রিপুরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ও নিহতদের প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে বলেন, খাগড়াছড়ি একটি সুনামধন্য জেলা, কিন্তু দুঃখের বিষয় যে এখানে কোন ডুবুরি দল নেই । ডুবুরি দল না থাকায় প্রতিনিয়তই বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ, শিশুরা চেঙ্গী নদীতে ডুবে গেলে তাৎক্ষনিকভাবে উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ আমরা দেখতে পায় না। ফায়ার সার্ভিসে ফোন করার ২০ মিনিট পরে তারা ঘটনাস্থলে আসে। তারা সেখানে এলেও কোন কাজ হয়নি। তারা কেউ সাঁতার জানেনা।পরে রাঙ্গামাটি ডুবুরি দলকে কল করা হলে প্রায় ৩ ঘন্টার পরে আসেন। ততক্ষণে শালবাগানের তরুণেরা ও বেশ কয়েকজন ছেলেরা দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর কর্তব্যরত ডাক্তাররা মৃত্যু ঘোষণা করেন বলে জানান।