জিয়াউর রহমান বাঙালী এনেছিলেন বলেই পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করতে পারছে- কর্ণেল (অব.) মণীষ দেওয়ান

Monish Deowan-02

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি :

পার্বত্যাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা কর্ণেল(অব,) মণীষ দেওয়ান বলেছেন, মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পার্বত্যাঞ্চলে চার লাখ বাঙ্গালীকে এমনিতে আনেন নাই। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত উপজাতীয়রা এখানে চাষাবাদ করে খেতে পারতো না। কিন্তু অপার সম্ভাবনাময় পার্বত্য চট্টগ্রামের কথা চিন্তা করে এই অঞ্চলকে কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল করার মানসে অত্রাঞ্চলে চার লাখ বাঙালী এনেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। যার ফলশ্রুতিতে পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ আজ কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করছে।

নির্বাচিত হতে পারলে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সম্প্রদায়কে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে সমতার ভিত্তিতে উন্নয়ন করবেন বলেও এক সংবাদ সম্মেলনে জানান সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। বুধবার বিকেলে রাঙামাটি শহরের স্থানীয় একটি রেষ্টুরেন্টে জেলায় কর্মরত স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে তার পক্ষ থেকে চা’ চক্র উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই তিনি এ কথা বলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অংশ নিলে দলের হয়ে জাতীয় সংসদের ২৯৯ আসন তথা পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণাও এ সংবাদ সম্মেলনে দিলেন মাত্র তিন বছর আগে বিএনপির রাজনীতিতে যোগদান করে সক্রিয় হওয়া অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল মণীষ দেওয়ান। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা’র সাথে আরো একজন উপস্থিত থাকলেও তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। এসময় রাঙামাটি জেলার অধিকাংশ গণমাধ্যম কর্মীর উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অবসর প্রাপ্ত কর্ণেল মনিষ দেওয়ান।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনিষ দেওয়ান তার জীবনের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের কথা উল্লেখ করে জানান, আমি রাজনীতিতে নবাগত এবং রাজনীতির মাঠে একজন শিশু তাছাড়া, আমি প্রথমে নিজেকে একজন যোগ্য দেশ প্রেমিক, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একজন অবপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা তথাপি একজন পরিপক্ক যোগ্য লোক হিসেবে আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য নিজেকে যোগ্য মনে করছি। এছাড়া তিনি বিএনপির রাজনীতিতে এমনিতে আসেন নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার সাথে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রয়েছে এবং আমি তাদের আর্শিবাদপুষ্ঠ।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে সিনিয়রিটি বলতে কোনো কথা নাই বিষয়টি হচ্ছে যোগ্যতার। যার যোগ্যতা আছে এবং যোগ্যতার প্রমান দিতে পারবে সেই বিএনপির নমিনেশন পাবে। আর এ ক্ষেত্রে দল যদি অন্য যে কাউকে নমিনেশন দেয় তাহলে আমি তার হয়ে কাজ করবো।

আপনি এসে রাঙামাটি বিএনপির সুখের ঘরে আগুন ধরিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় দল এখানে মত পার্থক্য থাকতে পারে। এছাড়া রাঙামাটি বিএনপিতে কোন গ্রুপিং নেই দাবি করে তিনি বলেন, দলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। আমিও একজন নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্ধি। আমাকে কেউ প্রতিপক্ষ মনে করলে সেটা সে ব্যক্তির দূর্বলতা বলেও জানান এই নেতা।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী লে: কর্ণেল (অবঃ) মনিষ দেওয়ান তার রাজনীতিততে যোগ দেয়ার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন এভাবে: মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং পরবর্তিতে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করে দেশের জন্য অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। শহীদ জিয়ার সাথে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার সুবাদে তার মধ্যে দেশ মাতৃকার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা ও দেশ প্রেম দেখে বিএনপির রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হই।

তিনি বলেন, একমাত্র বিএনপির রাজনীতিই পারে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। খালেদা জিয়া একজন আপোষহীন নেত্রী। তার কাছে দেশ ও জনগণের স্বার্থ সবার উর্ধ্বে। তাই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে কাজ করতে ২০১১ সালে আমি বিএনপিতে সক্রিয় হয়েছি।

বিগত ১৯৭২ থেকে ৭৩ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানান। তিনি সে সময়কার ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন